1. admin@banglabahon.com : Md Sohel Reza :
হিজাব ইস্যুতে এখনই জড়াতে চায় না ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন

হিজাব ইস্যুতে এখনই জড়াতে চায় না ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

বিদেশ ডেস্ক
  • প্রকাশ: শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের হিজাব বিতর্ক ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) কর্ণাটক হাইকোর্টের পক্ষ থেকে এ বিষয়ক একটি পিটিশন শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানো হয়। এরপরই এক ছাত্রী জরুরি শুনানির আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেন।

অবশ্য শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ভারতের শীর্ষ আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সঠিক সময়েই সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হবে।

একইসঙ্গে হিজাব বিতর্ক দেশজুড়ে ছড়িয়ে না দিতেও সবার কাছে আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

কর্ণাটকের স্কুল-কলেজে হিজাব পরা মুসলিম মেয়েদের ঢুকতে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে যে বিতর্ক শুরু হয়েছিল, তা বর্তমানে দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যটির সীমানা ছাড়িয়ে দেশটির বাকি অংশেও ছড়িয়ে পড়েছে। হিজাবে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে দিল্লি থেকে পশ্চিমবঙ্গে। মুখ খুলেছেন দেশটির বড় বড় রাজনীতিক ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বরাও।

তবে বিষয়টি আগেই আদালত পর্যন্ত গড়ায়। বৃহস্পতিবারই কর্ণাটক হাইকোর্টের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয় যে, স্কুল-কলেজে হিজাব পরার পিটিশনটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা যেন কোনো ধরনের ধর্মীয় পোশাক পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না যান। এরপরই কর্ণাটকের এক ছাত্রী সুপ্রিম কোর্টে জরুরিভিত্তিতে শুনানির আবেদন জানান।

তবে শুক্রবার ওই ছাত্রীর আবেদন খারিজ করে দিয়ে ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমন বলেন, ‘দয়া করে জাতীয় স্তরে এই বিষয়গুলোকে ছড়িয়ে দেবেন না। সঠিক সময় এলেই, আমরা হস্তক্ষেপ করব।’

এসময় এক আইনজীবী জানান, হিজাব বিতর্কের প্রভাব অনেক দূর এগিয়ে গেছে। মুসলিম ছাত্রীরা ১০ বছর ধরে হিজাব পরে আসছেন। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দয়া করে এটাকে আরও বৃহত্তর স্তরে ছড়িয়ে দেবেন না। আমরা জানি কী হচ্ছে। আপনারাই ভাবুন, এই ধরনের বিষয়কে কি দিল্লিতে টেনে আনা উচিত? যদি ভুল কিছু হয়, তবে আমরা রক্ষা করবো…।’

পিটিশন দাখিলকারী ওই ছাত্রীর দাবি, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ধর্মীয় পোশাক পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না যাওয়ার যে নির্দেশ কর্নাটক হাইকোর্টের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে, তা স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারকেই খর্ব করছে। সংবিধানের ২৫(১) ধারায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপরও বিশেষ প্রভাব ফেলবে এই নির্দেশ। ধর্মীয় পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় মুসলিম সম্প্রদায় ছাড়া অন্য কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায় প্রভাবিত হবে না। সমাজে অপ্রয়োজনীয় বিভেদ সৃষ্টি করবে এই নির্দেশ।

ওই ছাত্রী তার আবেদনে আরও জানিয়েছেন, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কলেজে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এই সময়ে ছাত্রীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে বাধা দেওয়া হলে, তার সরাসরি প্রভাব পড়াশোনাতেও পড়বে।

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে কর্ণাটকের বিভিন্ন স্কুল কলেজে একদিকে হিজাব পরে ক্লাস করার অনুমতির দাবিতে আন্দোলন করছে মুসলিম ছাত্রীরা। অন্যদিকে হিন্দু শিক্ষার্থীরা গেরুয়া ওড়না পরে হিজাববিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে।

কর্ণাটকে এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে গত মাসে উদুপি জেলার সরকারি বালিকা পিইউ কলেজে ছয়জন মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরার কারণে শ্রেণিকক্ষের বাইরে বসতে বাধ্য করার পর। সেই সময় কলেজ প্রশাসন জানায়, ইউনিফর্মের অংশ নয় হিজাব এবং ওই ছাত্রীরা কলেজের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। ছাত্রীদের ক্লাসে হিজাব পরার বিষয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় ডানপন্থী বিভিন্ন গোষ্ঠী ও তাদের ছাত্র সংগঠন।

উদুপির এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের মান্দিয়া এবং শিভামোগগা এলাকায়। সেখানকার কলেজ কর্তৃপক্ষ হিজাব নিষিদ্ধ করে। যদিও আইনে হিজাব পরে মুসলিম ছাত্রীদের ক্লাসে আসতে কোনও বাধা নেই।

পরে উদুপির একটি প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রী হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই বিষয়েই কর্ণাটকের হাইকোর্টে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হিজাব সংক্রান্ত পিটিশনটি শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট।

শেয়ার করতে চাইলে...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ...
© বাংলা বাহন সকল অধিকার সংরক্ষিত ২০১৯-২০২৪।
ডিজাইন ও আইটি সাপোর্ট: বাংলা বাহন
error: Content is protected !!