পিরোজপুরের নাজিরপুরে চাল আত্মসতের অভিযোগে মো. আবুল কালাম সুতার (৫০) নামের এক ইউপি সদস্য ও ওই চোরাই চাল ক্রেতা চক্রের সদস্য গোলাম মোস্তফাকে (৫৫) আটক করা হয়েছে।
আটক ওই ইউপি সদস্য উপজেলার ৯নং কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও একই ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি কুলুইতলী গ্রামের মৃত জব্বার সুতারের পুত্র। আর চোরাই চাল ক্রেতা চক্রের মূল হোতা মো. গোলাম মোস্তফা একই ইউনিয়নের উত্তর কলারদোয়ানিয়া গ্রামের মৃত হেমায়েত হোসেনের পুত্র।
বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) বিকালে তাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আটক করেন। পরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদের প্রত্যেককে ১৫ দিনের করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হাসানাত ডালিম ওই ইউপি সদস্যের আটকের খবর নিশ্চিত করে জানান, ১০টাকা মূল্যের চাল নির্ধারিত কার্ডধারীদের পরিবর্তে স্থানীয় ডিলারের কাছ থেকে তিনি নিয়ে যান ও তা আত্মসাৎ করেন। এতে কার্ডধারী স্থানীয় ছরোয়ার হোসেন সুতার চাল থেকে বঞ্চিত হন। পরে তার অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওই ইউপি সদস্য ও ওই চোরাই চালের ক্রেতা স্থানীয় চৌকিদার গোলাম মোস্তফাকে আটক করেন।
পরে নির্বাহী কর্মকর্তা মোহম্মাদ ওবায়দুর রহমানের ভ্রাম্যমান আদালত ওই ইউপি সদস্য ও চাল ক্রেতা উভয়কে ১৫ দিনের করে কারাদণ্ড প্রদান করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত কালাম সুতার ওই ওই ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নান্না মিয়া নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় ডিলার মো. মোহাসিন হোসেন জানান, ওই ইউপি সদস্য গত বুধবার কার্ড নিয়ে এসে ৩৬ জনের চাল দাবি করেন। এ সময় চাল দিতে না চাইলে তিনি বলেন, কার্ডধারীদের চাল আমি বাড়িতে পৌঁছে দিতে এসেছি। এসময় কয়েকজনকে উপস্থিত করলে পরে তাদের প্রত্যেকের নামে বরাদ্দকৃত ৩০ কেজি করে ১ হাজার ৮০ কেজি চাল দেয়া হয়।
অভিযোগকারী ছরোয়ার হোসেন সুতার জানান, ওই ইউপি সদস্য আমাদের কয়েক জনের নামে বরাদ্দকৃত চাল উত্তোলন করে তা আমাদের না দিয়ে আত্মসত করেছেন।
নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহম্মাদ ওবায়দুর রহমান জানান, কার্ডধারী ছরোয়ার হোসেন সুতার তার নামে বরাদ্দকৃত চাল না পেয়ে বিষয়টি আমাকে মুঠোফোনে (ইউএনও) জানান। আমি আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে ওই ইউপি সদস্যের সাথে ও স্থানীয় কার্ডধারীদের সাথে কথা বলি। পরে চালের হিসাব-নিকাশ দেখতে চাইলে তিনি সঠিকভাবে তা দেখাতে পারেন নি।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে ও ওই চালের ক্রেতা উভয়কে আটক করে নিয়ে আসি। পরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদের প্রত্যেককে ১৫ দিনের করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।