মানিকগঞ্জের বরংগাইল সাব-রেজিস্ট্রার আশীষ কুমার সরকার যোগদানের প্রথম কর্মদিবসে ভোগান্তি পড়েছেন দলিলদাতা, গ্রহীতা ও লেখকেরা। আজ প্রায় ৩৫টি দলিল সম্পাদন করা হলেও অর্ধশতাধিক দলিলদাতা ও গ্রহীতাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে সরকার হারিয়েছে রাজস্ব ও অর্থ উপার্জন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন দলিল লেখকেরাও। এ ঘটনায় দলিল লেখক, দাতা ও গ্রহীতাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে কর্মবিরতি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন দলিল লেখকেরা।
কয়েকজন দলিল লেখক জানান, নতুন নিয়ম মেনে দীর্ঘ দিন ধরে দলিল সম্পাদন করে আসছিলেন তারা। অনেক সময় দাতা, গ্রহীতার দু’ একটি মূল কাগজপত্র না এনেও ফটোকপি জমা দিয়েছেন। আগের সাব-রেজিস্ট্রার কাগজপত্রের ফটোকপি সঠিক মনে হলে দলিল সম্পাদন করতেন। কেউ কোন ভোগান্তি কিংবা হয়রানির শিকার হননি। গত রবিবার সাব-রেজিস্ট্রার আশীষ কুমার সরকার যোগদান করেছেন। আজ ছিল তাঁর প্রথম কর্মদিবস।
আগের মতোই অনেক দলিল সম্পাদনের জন্য দাখিল করা হয়। তিনি মূল দলিল, মূল জাতীয়, পরিচয়পত্র, মূল ওয়ারিশান সনদপত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র দেখতে চান। যাদের কাছে এগুলো ছিল। তাদের দলিল সম্পাদন করা হয়েছে। অনেক দাতা ও গ্রহীতার দু’একটি মূল কাগজপত্র সঙ্গে না থাকায় দলিল ফেরত দিয়েছেন। এ নিয়ে দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দূর-দূরান্তের অনেক কর্মজীবী মানুষ দলিল সম্পাদন করতে না পেরে চলে গেছেন। স্ট্যাম্পের মূল্য, কম্পিউটার কম্পোজসহ অন্যান্য বিলও কেউ কেউ পরিশোধ করেননি।
রিজিয়া পারভীন জানিয়েছেন, ওয়ারিশান সম্পত্তি বিক্রি করে দলিল সম্পাদনের জন্য এসেছিলেন। জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নিয়ে এসেছেন। কিন্তু, সাব-রেজিস্ট্রার মূল জাতীয় পরিচয়পত্র দেখতে চেয়েছিলেন। দেখাতে না পারায় দলিল ফেরত দিয়েছেন। পরবর্তীতে আবার আসতে হবে।
বরংগাইল দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আজাদুর রহমান জানান, সাব-রেজিস্ট্রার সদ্য যোগদান করেছেন। তিনি দলিল লেখকদের কোন নির্দেশনা এখনও দেননি। আগের মতো করে অনেক দলিল লেখক সম্পাদনের জন্য পাঠিয়েছেন। যে কারণে দলিল ফেরত দিয়েছেন। সাব-রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বসে নির্দেশনা জেনে পরবর্তীতে যাবতীয় কাগজপত্র যুক্ত করে দলিল সম্পাদনের জন্য পাঠাবো। এতে দাতা ও গ্রহীতা কেউ-ই ভোগান্তির শিকার হবেন না।
তবে, এভাবে দলিল ফেরত দেয়া হলে কর্মবিরতিসহ প্রতিবাদ কর্মসূচী পালনের কথা জানিয়েছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন দলিল লেখক।
এ ব্যাপারে বরংগাইল সাব-রেজিস্ট্রার আশীষ কুমার সরকার বলেন,‘আমি সদ্য যোগদান করেছি। কার কোন স্বাক্ষর এখনও চিহ্নিত করতে পারিনি। এখন সব কাগজপত্রই সন্দেহ হচ্ছে। মূল কাগজপত্র ছাড়া মালিকানা সঠিক কিনা বুঝবো কিভাবে? যাদের মূল কাগজপত্র ছিল না। সেগুলো ফেরত দেয়া হয়েছে। তারপরও আজ ৩০/৩৫টি দলিল সম্পাদন করা হয়েছে।’
দলিলদাতা, গ্রহীতার ভোগান্তি ও রাজস্ব হারানোর বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রারকে ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি।