আজ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এ দল প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দু’দিনের কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপি। পৃথক বাণী দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কর্মসূচির প্রথম দিনে আজ ভোরে দলের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাড়ে ১০টায় দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করবেন নেতা-কর্মীরা।
১৯৭৭ সালের জুনে ১৯ দফা কর্মসূচি নিয়ে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক (জাগো) দল গঠন করেন জিয়াউর রহমান। এর পর জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠন করে ওই বছর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর রমনা বটমূলে জাতীয়তাবাদী দলের জন্ম হয়। সর্বসম্মতভাবে জিয়াউর রহমান দলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর রাজনীতিতে আসেন তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়া। ১৯৮২ সালের ৩রা জানুয়ারি বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ পান তিনি। বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি নির্বাচিত হন ১৯৮৩ সালের মার্চে। স্বৈরশাসকবিরোধী আন্দোলনের একপর্যায়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব নেন। ১৯৮৪ সালের ১০ই মে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন।
১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পর ক্ষমতায় আসে বিএনপি। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি তিন দফা সরকার গঠন করে। ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি মামলায় সাজা হয় খালেদা জিয়ার। ওই দিন থেকে যুক্তরাজ্য থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দল পরিচালনা করছেন।
দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আজ রাজধানীতে বড় শোডাউন করবে বিএনপি। রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের জেলা-মহানগরসহ সব ইউনিটে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, আজ বিকাল তিনটায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালি শুরু হবে। শেষ হবে ফকিরাপুল, শাপলা চত্বর, ইত্তেফাক মোড় হয়ে রাজধানী সুপার মার্কেটে গিয়ে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বাণীতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই মহান দিনে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দলকে আরও গতিশীল করার ক্ষেত্রে মনেপ্রাণে কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। বর্তমান দুঃসময়ে জনগণকে সংগঠিত করার কোনো বিকল্প নেই। দেশ আজ দুঃশাসনে কবলিত। গুম-খুনের আতঙ্ক মানুষের নিত্যসঙ্গী। বিরোধী দল দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বাধ্য করা হচ্ছে। ফলে সমাজে দেখা দিয়েছে বিপজ্জনক বিশৃঙ্খলা। সরকার যেখানে জনগণের প্রতিপক্ষ, সেখানে মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা থাকতে পারে না। সুতরাং জনগণের নিরাপত্তা বিধানের জন্যই বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সবাইকে একযোগে রাজপথে নামতে হবে। পাশাপাশি দেশের বর্তমান ক্রান্তিকাল অতিক্রমের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন-সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এই দিনে আমি দেশবাসীকে বিএনপির পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ থাকার উদাত্ত আহ্বান জানাই।’