দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত প্যাকেজ বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলো আগের চেয়ে আরও বেশি পরিমাণে ঋণ বিতরণ করতে পারবে।
এ বিষয়ে রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। সার্কুলারে সব ব্যাংকের ঋণ বিতরণের ক্ষমতা ২ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত হারে ঋণ বিতরণের ক্ষমতা ১৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।
সাধারণ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আগে তাদের মোট আমানতের ৮৫ শতাংশ ঋণ বিতরণ করতে পারত। এখন এই হার আরও ২ শতাংশ বাড়িয়ে ৮৭ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ এসব ব্যাংক তাদের মোট আমানতের ৮৭ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করতে পারবে।
একই সঙ্গে ইসলামী ব্যাংকগুলো তাদের মোট আমানতের ৯০ শতাংশ আগে বিনিয়োগ করতে পারত। এখন তাদের বিনিয়োগের সীমা আরও ২ শতাংশ বাড়িয়ে ৯২ শতাংশ করা হয়েছে।
অর্থাৎ ইসলামী ব্যংকগুলো তাদের মোট আমানতের ৯২ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে।
সূত্র জানায়, ব্যাংকিং খাতে বর্তমানে আমানতের পরিমাণ ১২ লাখ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণের ক্ষমতা ২ শতাংশ বাড়ানোর ফলে ব্যাংকগুলো এখনকার সীমার চেয়ে ২৪ হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণ বিতরণ করতে পারবে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও সীমিত হয়ে পড়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সামগ্রিকভাবে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ বাড়াতে ব্যাংকিং খাতে তারল্যের জোগান বাড়ানো অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
ব্যাংকিং খাতে তারল্য পরিস্থিতির উন্নয়ন ও অর্থনীতির ওপর করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলা করতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করতে এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে তিন দফায় ৭৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এসব প্যাকেজ বাস্তবায়ন করতে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করতে হবে।
কিন্তু ব্যাংকগুলো আগেই বেশি মাত্রায় ঋণ বিতরণ করে সীমা লঙ্ঘন করেছে। ফলে তাদের পক্ষে বাড়তি ঋণ বিতরণ করা সম্ভব হতো না। এ কারণে ব্যাংকগুলোর তারল্য প্রবাহ বাড়িয়ে ঋণ বিতরণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হল।