শুক্রবার থেকে রসিদ ছাড়া বিক্রি করা যাবে না ভোজ্যতেল। আর মে মাস থেকে খোলা তেল বিক্রি বন্ধ।
মঙ্গলবার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এ কথা জানায়। রমজান উপলক্ষ্যে নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে জানিয়ে অধিদপ্তর বলেছে, কোনো ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে তার বিরুদ্ধে ভোক্তা আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, তেল নিয়ে ‘তেলেসমতি’ চলছে। এখন থেকে কোনো স্তরেই পাকা রশিদ ছাড়া কোনো পণ্য বেচাকেনা করা যাবে না। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে এ বিষয়ে আরও কঠোর হতে হবে।
ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ হুশিয়ারি দেন ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক। আর ব্যবসায়ীদের দাবি, অভিযানের নামে ব্যবসায়ী যেন হয়রানির শিকার না হয়।
বৈঠকে মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা মিলাদের দায়ী করে জানান, তারা সময়মতো তেল সরবরাহ না করায় বাজারে সংকট তৈরি হচ্ছে। সরবরাহ বন্ধ রেখে মূল কারসাজিতে জড়িত মিলাররা। আর দাম বাড়াতে ঘি ঢালছে কিছু অসাধু ডিলার।
সভায় উঠে আসে, সরবরাহ না করা, দাম বেশি নেওয়া, পাকা রশিদ না দেওয়াসহ নানা তথ্য। তাদের দাবি, মিল থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিতে গঠন করতে হবে যৌথ মনিটরিং টিম।
সভায় এক ব্যবসায়ী প্রতিনিধি অভিযোগ করেন, মিল বিগত একমাস কোনো সয়াবিন তেল বিক্রি করেনি। আগে যেগুলো সরবরাহ করেছিল, সেগুলো সরবরাহ করতেও সমস্যা হচ্ছে।
প্রতিনিধিরা দাবি করেন, মিল থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিতে গঠন করতে হবে যৌথ মনিটরিং টিম। ভোক্তা অধিদপ্তরের লোক থাকবে, এফবিসিসিআই এর লোকও থাকবে।
সভায় ট্যারিফ কমিশনের কর্মকর্তারাও অংশ নেন। বলেন, কিছু মধ্যস্বত্তভোগী ব্যবসায়ীর কারণে সাপ্লাই অর্ডার হাত বদল হয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে।
দুই ঘণ্টার আলোচনায় ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, রমজানে কেউ তেল কিংবা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য মজুত করে বাজার অস্থিতিশীল করলে, আইনের কঠোর প্রয়োগ দেখানো হবে।
তিনি বলেন, দেশে পর্যাপ্ত ভোজ্যতেল মজুত থাকলেও কৃত্রিম সংকট বানিয়ে দাম বাড়ানোয় জড়িতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
আমাদের বর্তমানে যে পরিমাণ মজুত রয়েছে, তাতে রমজান মাস পর্যন্ত কোনোরূপ সমস্যা হবে না। ইউক্রেনে যুদ্ধের বিষয়টি এখানে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সভায় পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সঠিকভাবে ব্যবসা পরিচালনায় সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আর বুধবার মিল মালিক, পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পর এবারের সংকট শক্ত হাতেই মোকাবিলা করা হবে বলে জানায় ভোক্তা অধিদপ্তর।