1. admin@banglabahon.com : Md Sohel Reza :
রিফাত হত্যা: ভাইরাল ভিডিও’র ‘সাহসী স্ত্রী’ থেকে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মিন্নি
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৪৩ অপরাহ্ন

রিফাত হত্যা: ভাইরাল ভিডিও’র ‘সাহসী স্ত্রী’ থেকে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মিন্নি

বাংলা বাহন ডেস্ক
  • প্রকাশ: বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। বাকি চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা জেলা শহরের কলেজ রোডে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাতকে। ওই ঘটনার একটি রোমহর্ষক ভিডিও ক্লিপ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।

সেই ভিডিওতে দেখা যায়, দুই যুবক রামদা হাতে রিফাতকে একের পর এক আঘাত করে চলেছে। আর তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি স্বামীকে বাঁচাতে হামলাকারীদের নির্বৃত্ত করতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন।

ঘটনাস্থল থেকে মুমূর্ষু স্বামীকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান মিন্নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন বিকেলেই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন রিফাত।

ওই ঘটনায় ‘জীবনের ঝুঁকি’ নিয়ে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টার জন্য সামাজিক মাধ্যমসহ সর্বত্র ‘সাহসী স্ত্রী’ হিসেবে প্রশংসিত হন মিন্নি।

পরে রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় মিন্নিকে এক নম্বর সাক্ষী করা হয়। রিফাত হত্যার পর বরগুনা শহরে ‘কিশোর গ্যাংয়ের’ দৌরাত্ম্যের বিষয়টি প্রকাশ পায়।

তাদের নেপথ্যে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে রিফাত হত্যার কারণ নিয়ে বিভিন্ন রকমের আলোচনা শুরু হয়। এরই মধ্যে গত বছর ২ জুলাই মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।

এর পরপরই মিন্নির শ্বশুর হত্যাকাণ্ডে তার পুত্রবধূ মিন্নির জড়িত থাকার অভিযোগ তুললে আলোচনা নতুন মোড় নেয়। ১৬ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে সেদিন রাতে তাকে রিফাত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

পরদিন আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান। কিন্তু মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবী সেদিন আদালতে দাঁড়াননি। স্থানীয় এক প্রভাবশালী রাজনীতিকের নির্দেশনার কারণে কোনো আইনজীবী মিন্নির পক্ষে সেদিন আদালতে ছিলেন না বলে অভিযোগ ওঠে।

পাঁচ দিনের রিমান্ডের তৃতীয় দিনেই মিন্নিকে আদালতে হাজির করে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মিন্নি বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

অবশ্য তার আগের দিনই পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘মিন্নি হত্যাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং হত্যা পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে মিন্নির যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।’

তবে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর তখন অভিযোগ করেন, ‘নির্যাতন করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে’ মিন্নিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে পুলিশ। এর পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের হাত আছে বলেও তিনি দাবি করেন।

সাক্ষী থেকে আসামি বনে যান মিন্নি। পরে ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নির জামিন মঞ্জুর করে। তবে শর্ত দেওয়া হয়, জামিনে থাকা অবস্থায় তিনি তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের জিম্মায় থাকবেন। আর এ সময়ে মিন্নি গণমাধ্যমের সামনে কোনো কথা বলতে পারবেন না।

রিফাত হত্যাকাণ্ডের দুই মাস ছয়দিন পর গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর বিকেলে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই ভাগে বিভক্ত করে দুটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এদের মধ্যে ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক আসামি এবং ১৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক।

এজাহারের এক নম্বর আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তার নাম অভিযোগপত্রে আসামির তালিকায় রাখা হয়নি।

বুধবার বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান এ মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বাকি চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: দেশ রুপান্তর

শেয়ার করতে চাইলে...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ...
© বাংলা বাহন সকল অধিকার সংরক্ষিত ২০১৯-২০২৪।
ডিজাইন ও আইটি সাপোর্ট: বাংলা বাহন
error: Content is protected !!