1. admin@banglabahon.com : Md Sohel Reza :
বিশ্বে সাড়ে ১১ কোটি মানুষ করোনায় সংক্রমিত: মার্কিন গবেষণা
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম

বিশ্বে সাড়ে ১১ কোটি মানুষ করোনায় সংক্রমিত: মার্কিন গবেষণা

বিদেশ ডেস্ক:
  • প্রকাশ: রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২০

গোটা বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে পিলে চমকানো তথ্য দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির এক দল গবেষক।

তাদের দাবি, বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ লাখ বলা হলেও এ সংখ্যাটি কম করে হলেও ১১ কোটি ৫০ লাখ। খবর দ্যা গার্ডিয়ানের।

আসলে বিভিন্ন দেশ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জনস হোপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় বা ওয়ার্ল্ডোমিটার আমাদের যে পরিসংখ্যান দেয়, আপাতদৃষ্টিতে আমরা সেটিকেই করোনায় আক্রান্ত বা মৃতের প্রকৃত হিসাব বলে ধরে নিই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, অনেকের দেহে ভাইরাস সংক্রমিত হলেও তার কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায়নি, অর্থাৎ তিনি অসুস্থ হননি। ফলে তার হাসপাতালে যাওয়ারও প্রয়োজন পড়েনি, পরীক্ষা না করায় রোগীর হিসাবের মধ্যেও তিনি আসেননি।

গার্ডিয়ান জানিয়েছে, স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের এই গবেষণাপত্র শুক্রবার প্রকাশিত হলেও তা এখনও বিশেষজ্ঞদের দ্বারা মূল্যায়িত হয়নি।

ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারা কাউন্টির ৩ হাজার ৩৩০ ব্যক্তির ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এ গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা জানা চেয়ে ৫০ থেকে ৮৫ গুণ বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের করোনাভাইরাসের প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় ক্যালিফোর্নিয়াতেই, এখন অবশ্য নিউইয়র্কসহ পূর্বাঞ্চলই বেশি বিপর্যস্ত।

ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৩০ হাজারের মতো, এর মধ্যে সান্তা ক্লারায় সরকারি হিসাবে আক্রান্ত ১ হাজার ৮৭০ জন, তার মধ্যে ৭৩ জন মারা গেছেন। তবে গবেষণাটি যখন চালানো হয়, তখন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজারের মতো, আর মারা গিয়েছিলেন ৫০ জন।

স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের দাবি, সান্তা ক্লারায় আসলে ৪৮ হাজার থেকে ৮১ হাজার মানুষের দেহে নতুন এই করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে, যা শনাক্ত সংখ্যার চেয়ে বহুগুণ বেশি।

তা হলে তারা অসুস্থ নন কেন? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মানবদেহের প্রাকৃতিক সুরক্ষাব্যবস্থা অ্যান্টিবডির কথা বলছেন এ গবেষকরা, যা পরীক্ষা করেই তারা বিপুলসংখ্যকের আক্রান্ত হওয়ার দাবি করছেন।

যে কোনো রোগপ্রতিরোধের ব্যবস্থা মানুষের দেহে সবসময়ই কার্যকর থাকে। মানুষের দেহে যখন বাইরে থেকে অচেনা কিছু প্রবেশ করে, শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা যদি তাকে ক্ষতিকর সন্দেহ করে, তখন তা ঠেকাতে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। সেই অ্যান্টিবডি তখন নির্দিষ্ট ওই জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে। এই লড়াইয়ে জীবাণু জিতলে মানুষ অসুস্থ হয়।

এই অ্যান্টিবডি তৈরি হয় বলেই প্রতিনিয়ত নানা রোগ-জীবাণুর মধ্যে থেকেও মানুষ অসুস্থ না হয়ে সচল থাকে। তবে যার প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হয়, তিনি অসুস্থ হন।

স্টানফোর্ডের এ গবেষক দল সান্তা ক্লারার বাসিন্দাদের মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পরীক্ষা করে রোগীর সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি বক্তির মধ্যে তা দেখতে পেয়েছেন। অর্থাৎ কোনো না কোনো পর্যায়ে তাদের দেহেও ভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছিল, কিন্তু সুবিধা করে উঠতে পারেনি বলে তাদের হাসপাতালে যেতে হয়নি।

এর ভিত্তিতে তারা বলছেন, নতুন করোনাভাইরাস (সার্স সিওভি-২) সার্স কিংবা মার্সের চেয়ে ভয়ানক অবস্থা তৈরি করলেও যে মাত্রায় ভয়ঙ্কর বলা হচ্ছে, আসলে ততটা না।

যেমন এখন শনাক্ত আক্রান্তের সংখ্যার সঙ্গে তুলনা করে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের হার ৪ দশমিক ১ শতাংশ বলা হলেও অশনাক্ত ব্যক্তিদের হিসাবে ধরলে মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ১২ থেকে শূন্য দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসবে।

শুধু জেলার মতো একটি এলাকায় এ গবেষণা চালিয়ে এলেও বড় এলাকাজুড়ে একই গবেষণা চালালে একই ফল আসবে বলে মনে করেন স্টানফোর্ডের গবেষক দল।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ ইতোমধ্যে ১০ হাজার মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে।

স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক এরন বেনডেভিড গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমরা মহামারীর কোন পর্যায়ে আছি, তা বুঝতে এ গবেষণাটি একটি পথ দেখাবে।

ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এখন যে অবরুদ্ধ অবস্থা চলছে যুক্তরাষ্ট্রে, তা তোলার যে দাবি উঠছে দেশটিতে, এই গবেষণা তার পালে হাওয়া দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

শেয়ার করতে চাইলে...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ...
© বাংলা বাহন সকল অধিকার সংরক্ষিত ২০১৯-২০২৪।
ডিজাইন ও আইটি সাপোর্ট: বাংলা বাহন
error: Content is protected !!