করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধি-নিষেধের প্রথম দিনে কঠোর অবস্থানে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। প্রথম দিনে ডিএমপির আট বিভাগে বিধিনিষেধ অমান্য করায় ৪৯৭ জনকে আটক এবং ২৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া সাত দিনের বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নে মাঠে রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ, ক্রাইম বিভাগ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা মাঠে রয়েছেন।
সরকারি ও বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের গাড়ি, পণ্যবাহী বাহন ছাড়া কিছু রিকশা-রিকশাভ্যান চলতে দেখা গেছে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে। তবে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ছিল কম।
ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর বিকেল ৫টা পর্যন্ত পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ, ক্রাইম বিভাগ ও মেজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ডিএমপির আট বিভাগ থেকে ৪৯৭ জনকে জনকে আটক এবং ২৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ৩১৬ জনকে আটক করা হয় ডিএমপির তেঁজগাও বিভাগ থেকে। এরপর রয়েছে মিরপুর বিভাগ। সেখানে আটকের সংখ্যা ১০৫। এ ছাড়া রমনা বিভাগ থেকে ৫৭ ও গুলশান বিভাগ থেকে ১৫ জনকে আটক করা হয়।
পলিশ জানায়, সর্বোচ্চ গ্রেপ্তার হয়েছে গুলশান বিভাগ থেকে ১৩১ জন। এরপর রয়েছে লালবাগ বিভাগ ৩৮, উত্তরা বিভাগ থেকে ৩৬ জন। মতিঝিল ও ওয়ারি বিভাগ থেকে যথাক্রমে ২ ও ১৯ জন।
এ ছাড়া ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে ৪ লাখ ৯২ হাজার ৫০৮ টাকা। গাড়ির মামলা হয়েছে ২৭৪টি। গাড়ি আটক করা হয়েছে ছয়টি এবং রেকারিং করা হয়েছে ৭৭টি।
জানতে চাইলে ডিএমপির তেঁজাও বিভাগের উপ কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘মন্ত্রিপষিদ ঘোষিত বিধিনিষেধ অনেকেই লঙ্ঘণ করেছেন। বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের হয়েছেন। কিছু ক্ষেত্রে আমরা ছাড় দিয়েছি। এ ছাড়া যারা নির্দেশিত বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করেছে তাদের আকট করেছি।
তিনি বলেন, ‘যাদের আটক করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, অকারণে কেউ ঘর থেকে বের হলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারায় মামলা দিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হবে। আবার আদালতে না পাঠিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে তাদের তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থাও করা হতে পারে। ২৬৯ ধারায় সর্বোচ্চ ৬ মাসের জেল, অর্থদণ্ড ও উভয়দণ্ড হতে পারে বলে জানান কমিশনার।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাংলামোটর, মগবাজার, ফার্মগেট, মৌচাক, শান্তিনগর, কাকরাইল, নয়া পল্টন, ফকিরাপুল, বিজয়নগর, মীরপুর, আজিমপুর, বাড্ডা, রামপুরা, শাহবাগ, ধানমন্ডি, হাতিরপুল ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের মোড়ে মোড়ে পুলিশের চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। কোথাও কোথাও কাঁটাতারের ব্যারিকেডও বসানো হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রাস্তায় থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের মোড়ে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহনী, বিজিবি সদস্যদের অবস্থান দেখা গেছে।