করোনাভাইরাস প্রাকৃতিকভাবেই সেপ্টেম্বর থেকে নিষ্ক্রিয় হতে শুরু করবে বলে মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী মাইকেল লেভিট।
রসায়নে ২০১৩ সালে নোবেলজয়ী মাইকেল লেভিট একজন জীব পদার্থ বিজ্ঞানী। ফেব্রুয়ারিতেই তিনি করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে আসার লক্ষণের কথা জানিয়েছিলেন। যা চীনে সত্য বলে প্রমাণিত হয়।
মাইকেল লেভিট সোমবার স্ট্যানফোর্ড ডেইলিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি জানুয়ারির ২০ তারিখ থেকে চীনে করোনা মহামারির আঘাত পর্যালোচনা করতে থাকি। যদি আপনি মনে করেন যে এ ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তেই থাকবে তখন মনে হবে আগের দিনের তুলনায় পরের দিনের মৃত্যু সংখ্যা বাড়বে। কিন্তু আমি যখন চীনে এর ছড়িয়ে পড়া লক্ষ্য করি, টানা তিন অথবা চার দিন পর মৃত্যু সংখ্যা কমতে শুরু করেছে বলে দেখি। আমি যদি ভাবি পথম দিনে এ হার ছিল ৩০ ভাগ, তাহলে পরের দিন তা হলো ২৬ ভাগ, এভাবে ২২, ১৮ ভাগে নেমে আসতে লাগল। তখনই আমার মনে হলো, বাহ তার মানে তো এই যে মৃত্যু হার ক্রমেই নিচের দিকে নামছে।
তিনি চীনে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কঠোরভাবে লকডাউন মেনে চলাকে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে বিবেচনা করলেও ভাইরাসটি নিজের স্বভাবেই ক্রমে নিষ্ক্রিয় হতে থাকে বলে জানান।
এর ব্যাখ্যায় মাইকেল লেভিট বলেন, যদি আমি ধরেই নিই আমি কভিড (১৯) আক্রান্ত হয়েছি, যা আমি জানিই না, তখন আমি আমার বন্ধু, শিশু, আশপাশের মানুষদের সংক্রমিত করলাম। এটা প্রথম দিনেই ঘটবে। কিন্তু পরের দিন, আমার পক্ষে নতুন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল হবে সংক্রমিত করার জন্য। এভাবে কিছু দিন পর দেখা যাবে সংক্রমিত করার মানুষই বাস্তবেই আর খুঁজে পাওয়া যাবে না, কারণ হয়ত অদৃশ্য কারো দ্বারা তারা আগেই সংক্রমিত হয়ে গেছে। এভাবে এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের একটা প্রাকৃতিক প্রতিরোধ গড়ে উঠবে।
হার্ড ইমিউনিটি প্রশ্নে তিনি বলেন, কেউ মনে করেন ৮০ ভাগ লোকের হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করতে হবে, কেউ বলে ৬০, তবে আমি বলি ৩০ ভাগের এটা করা দরকার হবে। আর যারা ভাবছে হার্ড ইমিউনিটি দরকারই নাই, তাদের আমি সঠিক মনে করি না।
তিনি আগামী আট থেকে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ কভিড-১৯ এ সর্বোচ্চ আক্রান্ত হবে বলে জানান। এরপর থেকে তা কমতে থাকবে। সে হিসেবে সেপ্টেম্বর থেকে করোনাভাইরাস আপনা-আপনি নিষ্ক্রিয় হতে থাকবে।
লেভিট বলেন, করোনা এমন কোনো রোগ নয় যা মানবজাতিকে শেষ করে দেবে।