মানুষের শরীরে কাজ করছে এমন একটি ভ্যাকসিন তৈরির দাবি করেছে ইতালি। রোমের স্পালানজানি হাসপাতালে ভ্যাকসিনটির পরীক্ষা হয়েছে বলে দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম এনএসএ’র প্রতিবেদনে খবর এসেছে।
সংবাদে বলা হয়েছে, টাকিজ নামের একটি ফার্ম থেকে ভ্যাকসিনটি তৈরি করা হয়েছে। গত মার্চে তারা ভ্যাকসিন তৈরির ঘোষণা দেয়।
প্রতিষ্ঠানটির সিইও লুইজি আউরিসকিওর দাবি, ইঁদুরের ওপর গবেষণার পর ভ্যাকসিনটি দিয়ে তারা মানবদেহেও অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।
অ্যান্টিবডি হল এমন একটি প্রতিরোধক প্রোটিন যা শরীরের ইমিউন সিস্টেম (রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা) দ্বারা উৎপন্ন হয়।
করোনার মতো ক্ষতিকর কোনো ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে এই অ্যান্টিবডি তা শনাক্তের পর প্রতিরোধ করে।
বিশেষায়িত শ্বেত রক্ত কণিকায় অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয় যাকে বি লিম্ফোসাইটস বা বি সেল বলা হয়।
‘পৃথিবীতে আমরাই প্রথম ভ্যাকসিনের মাধ্যমে করোনাভাইরাসে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হচ্ছি। সামনের কয়েক মাসে পুরোপুরি ফলাফল আসবে,’ বলেছেন লুইজি আউরিসকিও।
সমগ্র পৃথিবীতে ভ্যাকসিন ছড়িয়ে দিতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সাহায্য কামনা করেছেন লুইজি, ‘এটা কোনো প্রতিযোগিতা নয়। আমরা একসঙ্গে কাজ করলে করোনাভাইরাস ঠেকাতে পারব।’
ইতালির অন্য গবেষকেরা এই ফলাফলকে ‘উৎসাহব্যঞ্জক এবং প্রত্যাশার বাইরে’ বলে মন্তব্য করেছেন।
লুইজি জানান, ভ্যাকসিনটি মানুষের কোষে ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ভ্যাকসিনে কভিড-১৯ প্রতিরোধী যে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে সেটি কতদিন শরীরে থাকে তা এখন দেখার বিষয়।
টাকিজের চিকিৎসক ইমানুয়েল মাররা বলেছেন, ‘আমাদের ভ্যাকসিনে শরীরে যে ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে, সেটি দারুণ কার্যকর। দ্বিতীয় ধাপে আরও ভালো ফলাফল আশা করছি।’
গোটা পৃথিবীতে প্রায় শতাধিক কোম্পানি কভিড-১৯ রোগের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। গত মার্চে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি তাদের চাডক্স১ এনকভ-১৯ ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল দিয়েছে। ট্রায়াল দিয়েছে চীনও। আমেরিকায় একাধিক কোম্পানি ট্রায়াল দিয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রথম ট্রায়াল শুরু করে মর্ডানা কোম্পানি। সর্বশেষ গত সোমবার ট্রায়াল দেয় নিউইয়র্ক-ভিত্তিক ওষুধ কোম্পানি ফাইজার।