কিছুদিন ধরে বৃদ্ধি পেয়েছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। এর ফলে হাসপাতালগুলোতেও রোগীর চাপ বাড়ছে। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, যেভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে তাতে সামনে হাসপাতালগুলোয় ভিড় আরও বাড়বে।
জানা যায়, সোমবার ঢাকার সরকারি-বেসরকারি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর সাধারণ শয্যায় ১ হাজার ৫২২ জন রোগী ভর্তি ছিল। ঠিক এক সপ্তাহ আগে ১৪ জুন এসব হাসপাতালের সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল এক হাজার ১২৮ জন। এ সময়ে হাসপাতালগুলোর আইসিইউ শয্যায়ও রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ দিন ঢাকার ৪টি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে কোনো শয্যা ফাঁকা ছিল না।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনের তথ্য থেকে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে কোনো শয্যা খালি নেই। এদিন রাজধানীর কোভিড ডেডিকেটেড সরকারি হাসপাতালগুলোর আইসিইউর ৩৮৪টি শয্যার মধ্যে ফাঁকা রয়েছে ১৯৫টি। ১৪ জুন ঢাকার কোভিড ডেডিকেটেড সরকারি হাসপাতালগুলোর ৩৮৪টি শয্যার মধ্যে ফাঁকা ছিল ২৩৪টি শয্যা।
সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৪ হাজার ৬৩৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই দিন মৃত্যু হয়েছে ৭৮ জনের। এক দিনে শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা গত নয় সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এর আগে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে ১৪ এপ্রিল এক দিনে ৫ হাজার ১৮৫ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল। বিভাগওয়ারি হিসাবে ঢাকায় বিভাগে মোট আক্রান্ত হয়েছে ১৮৩৭ জন হয়েছে, যা সারা দেশের মোট শনাক্তের প্রায় ৪০ শতাংশ। এদিন ঢাকা বিভাগে শনাক্ত হওয়া নতুন রোগীদের মধ্যে ১২৯৪ জনই ঢাকা মহানগরের। গত একদিনে ঢাকা বিভাগেই সবচেয়ে বেশি ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালে রোগীর চাপ সম্প্রতি বেড়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক ডা. খলিলুর রহমান। তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় হাসপাতালে রোগী বেড়েছে। সপ্তাহখানেক আগেও আমাদের করোনা ইউনিটে ভর্তি রোগী থাকতো ৬০ থেকে ৭০ জন। এক সপ্তাহ যাবত ভর্তি রোগী একশোর উপরে থাকছে। আজকে ভর্তি আছে ১০৩ জন। আমাদের এখানে ১০টি আইসিইউ বেডের মধ্যে ১-২টিতে রোগী ভর্তি ছিল, আজ কোনো বেড ফাঁকা নেই।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের পুরোনো ধরনের সঙ্গে ডেল্টা ধরন যোগ হয়ে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এ কারণে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর। বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের মহাসচিব ডা. আহমেদুল বলেন, চিকিৎসার জন্য মানুষ ঢাকায় আসছে। আক্রান্ত ব্যক্তি ঢাকায় আসার পথে আরও অনেককে সংক্রমিত করছে। এটাও পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলবে। উল্লেখ্য, দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্ত সাড়ে আট লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ৬২৬ জনের।