1. admin@banglabahon.com : Md Sohel Reza :
বিয়ের পর মেয়েদের স্বামীকে স্বজনদের থেকে আলাদা করার প্রবণতা কেন?
সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ০৬:৫১ অপরাহ্ন

বিয়ের পর মেয়েদের স্বামীকে স্বজনদের থেকে আলাদা করার প্রবণতা কেন?

শারমিন সুলতানা রিমি
  • প্রকাশ: সোমবার, ১০ জুন, ২০২৪

বিয়ের পর বেশিরভাগ মেয়েদের মধ্যে একটা জিনিস লক্ষ করা যায়, সেটা হলো- তার স্বামীকে স্বামীর দিকের আত্মীয় স্বজন থেকে আলাদা করার প্রচেষ্টা চালায়। যৌথ পরিবার ভেঙে নিজের ও ছোট পরিবার তৈরি করার মানসিকতা প্রবল থাকে। আমি বলছি না, সবার শ্বশুর বাড়ির লোকই ভালো হয়। কারো কারো এমন অবস্থা হয় যে, শ্বশুর বাড়িই জেলখানায় পরিণত হয়ে যায়। সেখানেও কিন্তু ওই একজন নারীই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দায়ী থাকেন। কেননা তার মাথায় এই বিষয়টি ঘুরপাক খেতে থাকে। তার এতোদিনের সংসারে কেউ উড়ে এসে জুড়ে বসেছে কিংবা তার ছেলে পর হয়ে গেছে। বেশিরভাগ মেয়ের কাছেই তাদের শাশুড়ির চেয়ে শশুর মশাই প্রিয়? কিন্তু কেন? কারণ এটাই…

অথচ শ্বশুর থেকে শাশুড়ী প্রিয় হবার কথা ছিলো, কেননা দিনের বেশিরভাগ সময় বউ- শাশুড়িই একসাথে থাকেন, একে অপরকে কাজে সাহায্য করেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, আধিপত্য নিয়ে দন্দ্ব। ছেলে শাশুড়ীর রান্নার প্রশংসা করলে বউয়ের কষ্ট হয়, আবার বউয়ের রান্নার প্রশংসা করলে শাশুড়ীর চিন্তা, আমার পোলারে তাবিজ করছে। ঠিক এমনই।

আবার কিছু সংসারে শাশুড়ি ফেরেশতার মত বা নিরীহ গোছের হলেও এর ভিন্ন রূপ খেয়াল করা যায়। যেমন, যৌথ পরিবার ভেঙে ফেলার প্রচেষ্টা, এককভাবে আধিপত্য বিস্তারের মানসিকতা ও স্বামী বাড়ির আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে স্বামীকে দূরে রাখার প্রবণতা। এই প্রবণতা কেন?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সেই মানুষটার বাবা মায়ের পরিবার টাও ঠিক একক পরিবার। তারাও যৌথ পরিবারে বড় হয়নি। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, তাদের পরিবারে মায়ের দিকের আত্মীয় স্বজনদের প্রভাব বেশি। তারা সেটা দেখেই বড় হয়েছে বা অভ্যস্ত। কারো সাথে রুম শেয়ার করে থাকেনি কিংবা যৌথ পরিবারে একটা মিস্টি ব্যাপার যে আছে, “খাবার কম থাকলে, ভাগাভাগি করে খাওয়া,” সেটা সে কখনো করেনি।

মোট কথা সে কখনো কোন কিছুই “শেয়ার” করেনি বা অভ্যস্ত না। সেখান থেকেই তার আধিপত্য বিস্তার ও স্বার্থপর মানসিকতা তৈরি হয়েছে। একটা মানুষ কখনো একা বেঁচে থাকতে পারে না। তাতে সে যতই সম্পদশালী কিংবা ক্ষমতাবান হোক না কেন? নিজের দিকের ও স্বামীর দিকের, দু’দিকেরই পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের প্রয়োজন আছে। তা মেইনটেইন করা জরুরি। কোনো দিকের পরিবারের সদস্য এবং স্বজনই ফেলনা নয়। সেটা শশুরবাড়ি ও বউয়ের বাড়ি দু’পক্ষরই মাথায়ই রাখা উচিত। বউয়ের পরিবারের সদস্য, স্বজনকেও যেমন মূল্যায়ন করা উচিত। ঠিক তেমনটাই বউয়েরও উচিত শশুরবাড়ির দিকের আত্মীয় স্বজন ও পরিবারের সবাইকে মূল্যায়ন করা। আত্মীয় স্বজন ছাড়া, পরিবারের মানুষ ছাড়া বেঁচে থাকার মানসিকতা মনে স্থান না দেয়াই যুক্তি যুক্ত। কেননা, মানুষের জীবনে “প্রয়োজন” জিনিস টা কখনো শেষ হয় না। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
“আত্মীয়তার মধ্যে সম্পর্ক ছিন্নকারী জাহান্নামী”
সুতরাং এই ধরনের মানসিকতা দূর করতে হবে।

পরিশেষে বলবো, মানুষ কখনো একা সুখি হতে পারে না। সবার সাথে ও সবাইকে ভালবেসে সুখি হতে হয়। কেননা, জীবনে প্রতিটা মানুষকে প্রয়োজন। কাউকেই তুচ্ছ মনে করা উচিত নয়। কখনো কখনো তুচ্ছ মানুষগুলো কোন না কোন কাজে দরকার হতে পারে। যেমন, ছোট্ট ইদুর জালে বন্দি থাকা বনের রাজা সিংহের দরকার পরে ছিল।

Moral of the story:
Man cannot live alone.  He can never be happy alone. Sometimes insignificant people are needed for some work, just like that little mouse was needed by the lion king of the forest.

লেখক:
শারমিন সুলতানা রিমি
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা

 

শারমিন সুলতানা রিমি’র আরেকটি লেখা পড়ুন:
যেভাবে রুখবেন সন্তানের আত্নহত্যার প্রবণতা

শেয়ার করতে চাইলে...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ...
© বাংলা বাহন সকল অধিকার সংরক্ষিত ২০১৯-২০২৪।
ডিজাইন ও আইটি সাপোর্ট: বাংলা বাহন
error: Content is protected !!