1. admin@banglabahon.com : Md Sohel Reza :
হেফাজত কমিটি বিলুপ্ত
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন

হেফাজত কমিটি বিলুপ্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশ: রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন সংগঠনটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। গতকাল রবিবার রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই ঘোষণা দেন। পরে জুনায়েদ বাবুনগরী স্বাক্ষরিত একটি সংক্ষিপ্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও একই কথা জানানো হয়।

নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছেন বাবুনগরী। নতুন কমিটি গঠনের ছয় মাস পার হওয়ার আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকেন্দ্রিক বিক্ষোভ থেকে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনার পর পুলিশি অভিযানে চাপে থাকার মধ্যে বাবুনগরীর এই ঘোষণা এলো।

কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়ে হেফাজতে ইসলামের ফেইসবুক পাতায় ১ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় বাবুনগরী বলেন, ‘দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতার পরামর্শে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে হেফাজতের কার্যক্রম শুরু হবে।’

কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির ছিলেন চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী। ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুর আগের দিন মাদ্রাসায় বিক্ষোভ ও হট্টগোলের মধ্যে মহাপরিচালকের পদ ছাড়তে বাধ্য হন আহমদ শফী। শফীর মৃত্যুর পর তার পরিবার এবং হেফাজতে ইসলামের মধ্যে তার অনুসারীরা শফীকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এজন্য তারা বাবুনগরী ও তার অনুসারীদের দায়ী করেন। আহমদ শফীর মৃত্যুর পর সংগঠনটির একাংশের সঙ্গে বিরোধের মধ্যে গত বছরের ১৫ নভেম্বর বাবুনগরীকে আমির করে হেফাজতের ১৫১ সদস্যের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছিল। জুনায়েদ বাবুনগরী নেতৃত্বাধীন কমিটিতে শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানী এবং তার অনুসারী কাউকে রাখা হয়নি। দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকা হেফাজতের নেতারা গত বছরের শেষ দিকে রাজধানী ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতায় নেমে নতুন করে আলোচনায় আসেন। সংগঠনটির নেতা মামুনুল হক ওই ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন। পরে তিনি হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিবের পদ পাওয়ার পাশাপাশি ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদকও হন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের বিরোধিতা করে ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশ-সহিংসতা করে প্রথম আলোচনায় আসে হেফাজতে ইসলাম। গত মাসের শেষ দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর ঘিরে হেফাজতের বিক্ষোভ ও হরতাল থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ দেশের বিভিন্ন স্থানে হওয়া এই সহিংসতায় সরকারি হিসেবে ১৭ জন নিহত হন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এছাড়া চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের অন্যান্য জায়গায়ও ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর পুরনো বিভিন্ন মামলায় গতকাল পর্যন্ত মামুনুলসহ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ১৯ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া সাম্প্রতিক বিক্ষোভ-সহিংসতার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৭৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৬৯ হাজারের বেশি জনকে আসামি করা হয়েছে।

গত ৩ এপ্রিল হেফাজত নেতা মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীসহ স্থানীয়দের হাতে অবরুদ্ধ হন। হেফাজতের নেতাকর্মীরা সেখানে হামলা চালিয়ে মামুনুলকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। মূলত এরপর থেকে হেফাজতের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা দৃশ্যমান হয়। গত ১১ এপ্রিল হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর গত ১৮ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন আলোচিত মামুনুল হক। এমন পরিস্থিতিতে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠনটির কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দিলেন বাবুনগরী।

পুলিশের দাবি, হেফাজত নেতারা নাশকতার বড় ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলেন, যার চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রক্ষমতা দখল।

শেয়ার করতে চাইলে...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ...
© বাংলা বাহন সকল অধিকার সংরক্ষিত ২০১৯-২০২৪।
ডিজাইন ও আইটি সাপোর্ট: বাংলা বাহন
error: Content is protected !!