1. admin@banglabahon.com : Md Sohel Reza :
চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিস্পত্তি চায় ভুটান
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন

চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিস্পত্তি চায় ভুটান

ডেড লাইন
  • প্রকাশ: শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩
ছবি: ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। -সংগৃহীত

‘হিমালয়ান নেশন’ বা ‘হিমালয়ের জাতি’ হিসেবে পরিচিত ভুটান। দেশটি হিমালয় পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত যা এশিয়ার দুই বৃহত্তম শক্তি ভারত এবং চীনের মাঝে। দেশটির এই অনন্য ভৌগোলিক অবস্থান তাদের জন্য খুব একটা সুখকর নয়।

বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের যে দুটি দেশের সঙ্গে এখন পর্যন্ত সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হয়নি তাদের মধ্যে ভুটান অন্যতম। আরেক দেশ হচ্ছে ভারত। দেশটির সঙ্গে দীর্ঘ সময় হিমালয় সীমান্তে চীনের বিরোধ রয়েছে।

বিশ্বজুড়ে চীনের উত্থানের কারণে ভুটানের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে যাতে তারা চীনের সঙ্গে একটি সমঝোতা পৌঁছায়। কিন্তু চীনের সঙ্গে যে কোনো ধরণের সমঝোতায় পৌঁছাতে হলে ভারতের অনুমোদন লাগবে। থিম্পু এবং দিল্লির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে এবং ভারত মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক এবং সামরিক সহায়তা দিচ্ছে ভুটানকে।

হিমালয়ের উত্তর এবং পশ্চিম দিকে ভুটান ও চীনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিরোধ আছে। যেসব জায়গা নিয়ে বিরোধ আছে সেগুলোর মধ্যে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ডোকলাম মালভূমি রয়েছে। এই ডোকলাম উপত্যকা ভারত, ভুটান এবং চীনের সংযোগস্থলে অবস্থিত।

ভুটান এবং চীন – উভয়ই ডোকলাম মালভূমি নিজেদের বলে দাবি করছে এবং ভারত এক্ষেত্রে ভুটানকে সমর্থন দিচ্ছে। ভুটানকে সমর্থন দেবার পেছনে ভারতের নিজস্ব কারণ রয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ডোকলাম মালভূমি নিরাপত্তার দিক থেকে ভারতের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে যদি চীনের আধিপত্য তৈরি হয় তাহলে তাহলে বিষয়টি ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরের জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে। ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই জায়গাটি ভারতের মূল ভূখণ্ডের সাথে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সংযোগ তৈরি করেছে।

সম্প্রতি বেলজিয়ামের লা লিবরা সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বিষয়টি নিয়ে ভুটানের সীমাবদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, এই সমস্যা ভুটান একা সমাধান করতে পারবে না। আমরা এখানে তিনটি পক্ষ। এখানে বড় কিংবা ছোট দেশ বলে কিছু নেই, এখানে তিনটি দেশই সমভাবে আছে। আমরা তৈরি আছি। অন্য দুটি পক্ষ যখন তৈরি হবে তখন আমরা আলোচনা করতে পারি।

শেরিং আশা প্রকাশ করেন, দুই-একটি বৈঠকের মাধ্যমে ভুটান এবং চীন তাদের কিছু সীমান্ত চিহ্নিত করতে সক্ষম হবে।

উভয় দেশ ১৯৮৪ সাল থেকে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করছে। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের সীমান্তে চীন প্রবেশ করেনি। ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য ভারতে সতর্ক ঘণ্টা বাজিয়েছে, বিশেষ করে গণমাধ্যমে।

অনেক বিশ্লেষক উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, ভুটান হয়তো চীনের সঙ্গে ডোকলাম উপত্যকা নিয়ে একটি বিনিময় চুক্তি করতে পারে। অনেক বলছেন, ডোকলাম উপত্যকা নিয়ে ভুটান তাদের দাবি জোরালো-ভাবে তুলে ধরছে না।

ভারতের সাবেক সিনিয়র কূটনীতিক পি স্টবডান বলেছেন, ভারতের উদ্বেগ হচ্ছে, তাদের হেনস্তা করার জন্য চীন সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করতে ভুটানের উপর চাপ চাপ প্রয়োগ করছে। ভারতীয় গণমাধ্যমে এনিয়ে শোরগোল শুরুর পর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং গত মাসে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

সাপ্তাহিক দ্য ভুটানিজকে শেরিং বলেন, আমি নতুন কিছু বলিনি এবং ভুটানের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন হয়নি। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী মন্তব্যের জের ধরে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তাতে ভুটানের মানুষ অবাক হয়েছে।

চীনের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, ভারতের সমর্থন ছাড়া চীনের সাথে সমঝোতায় পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ভুটানকে বেশ বেগ পেতে হবে।

সাংহাই ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো লিউ যংগিই বিবিসিকে বলেন, ভারত এখানে প্রতিবন্ধক। চীন এবং ভুটান মিলে যদি সমস্যার সমাধান করে, তাহলে ভারত বাদ রয়ে যাবে। আমি মনে করি না ভারত এটা হতে দেবে।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে চীন এবং ভুটান চূড়ান্ত চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল, কিন্তু ভারতের হস্তক্ষেপের কারণে সেটি ব্যর্থ হয়ে যায়।

চীনের সাথে ভুটানের সীমান্ত বিরোধের বিষয়টি কয়েক দশকের পুরনোর ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধের সাথে সম্পর্কিত। চীন এবং ভারতের মধ্যকার সীমান্ত পুরোপুরি চিহ্নিত নয়।

উভয় দেশ পরস্পরের কাছে জমি দাবি করছে। ভারত বলছে, তাদের প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার সীমান্ত চীনের ভেতরে ঢুকে গেছে। অন্যদিকে চীন দাবি করছে তাদের প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার সীমান্ত ভারতের ভেতরে রয়েছে।

দুই দেশের সীমান্ত কার্যত শুরু হয়েছে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় লাদাখ থেকে শুরু করে পূর্বে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত, চীন যেটিকে দক্ষিণ তিব্বত বলে।

চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়টি ভুটানের মানুষ পর্যবেক্ষণ করছে। তারা মনে করে চীনের সাথে একটি সমঝোতা করলে ভুটানের জন্য লাভজনক হবে।

শেয়ার করতে চাইলে...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ...
© বাংলা বাহন সকল অধিকার সংরক্ষিত ২০১৯-২০২৪।
ডিজাইন ও আইটি সাপোর্ট: বাংলা বাহন
error: Content is protected !!