নারায়ণগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদীবন্দর কয়লা ঘাটে নির্মাণাধীন শীতলক্ষ্যা ব্রিজ এলাকায় লঞ্চডুবির ঘটনায় পাঁচ নারীর লাশ উদ্ধার হয়েছে। ওই লঞ্চে মোট ৪২ যাত্রী ছিলেন বলে বিআইডব্লিটিআই জানায়। নিহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। লঞ্চ ডুবে যাওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া আহত অবস্থায় ১১ জনকে উদ্ধার করে হাসাপাতলে নেয়া হয়। পরে রাতে আরো চারজনের লাশ পাওয়া যায়।
সন্ধ্যার পর বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হয়। এরপর আবার শুরু হয় উদ্ধার কাজ।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুক্লা সরকার সাংবাদিকদের পাঁচ লাশ উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ বিআইডব্লিটিআই এর ট্রাফিক পরিদর্শক বাবু লাল জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ স্টেশন থেকে এমবি হাবিব আল হাসান নামে লঞ্চটি বন্দর কালুঘাট শীতলক্ষ্যা নদী দিয়ে মুন্সীগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। ওই সময় পেছন থেকে একটি কার্গো জাহাজ লঞ্চটিকে ধাক্কা দিয়ে ভাসিয়ে ৫০ ফুট দুরে ব্রিজের নিচে নিয়ে যায়। সেখানে লঞ্চটি কাত হয়ে ডুবে যায়।
লঞ্চে থেকে সাঁতরে তীরে ওঠা মুন্সীগঞ্জের বাসিন্দা শ্রমিক আলম মিয়া জানান, আমি লঞ্চের পেছনের ছাদে ছিলাম। হঠাৎ দেখি একটি কার্গো জাহাজ পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে আমাদের লঞ্চটিকে ভাসিয়ে ব্রিজের নিচে নিয়ে আসে। পরে লঞ্চটি ডুবে যায়। আমি ছাদ থেকে লাফিয়ে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হই। লঞ্চে প্রায় ৫০-৬০ জন যাত্রী ছিল। তদের মধ্যে ১৫-২০ জন হয়ত সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস নদীর তীরে দাঁড়িয়ে আছে। বৃষ্টির কারণে তারা উদ্ধার কাজে নামতে পারছে না।
অন্যদিকে সন্ধ্যার পর থেকেই নদীর তীর নিখোঁজ স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে আশপাশের পরিবেশ।
ঘটনাস্থল থেকে বন্দর থানা ওসি দীপক চন্দ্র সাহা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিলেন, আপাতত একজন নারীকে উদ্ধারের পর হাসাপাতলে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেছে বলে জানতে পেরেছি। রাস সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ১১ জনকে নদীর তীর থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে আটজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় পৌঁছানোর জন্য রওনা দিয়েছে। বৃষ্টি কমলেই উদ্ধার তৎপরতা শুরু হবে।