মানিকগঞ্জে বিয়ের পাঁচ বছর পর কাবিন করেও সংসার করা হলো না গৃহবধূ তোহরা খাতুনের (১৮)। কাবিন করে শুশুর বাড়ি যাওয়ার পাঁচ দিন পর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে তার।
আজ সকালে শিবালয় উপজেলার রাধাকান্তপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়ি নিজ ঘরে গলায় ফাঁস নিয়ে তিনি আত্নহত্যা করেছেন বলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন। অপরদিকে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে গৃহবধূর পিতার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ করছেন।
মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যার হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
ওই গ্রামের আল-আমিনের স্ত্রী তোহরা পাশ্ববর্তী কৃষ্ণদিয়া গ্রামের ইউসুফ শেখের কন্যা।
ইউসুফ শেখ জানান, তিন কন্যার মধ্যে মেজো তোহরা। পাঁচ বছর আগে অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তাকে পারিবারিকভাবে আল-আমিনের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তখন কাবিন করা হয়নি। যৌতুকের বিষয়টিও চূড়ান্ত ছিল না।
কিন্তু বিয়ের কিছু দিন পরেই যৌতুকের জন্য তোহরাকে কলহ ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। দু’বছর পর তাদের ঘরে জন্ম নেয় পুত্র আলিফ।
তারপরও কলহ ও নির্যাতন বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে গত ১১ মাস আগে পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে পিতার বাড়ি চলে আসেন তোহরা। এরপর থেকেই শ্বশুর বাড়ি ফেরাতে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ বসেও সুরাহা হয়নি।
পরে গত বৃহস্পতিবার উথলী ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বসে আড়াই লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে আল-আমিনের সঙ্গে তোহরার বিয়ের কাবিন করা হয়। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তোহরাকে স্বামীর বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা থাকে।
কিন্তু, শনিবার বিকালে স্বামীর সঙ্গে তোহরা শ্বশুর বাড়ি যায়। সোমবার রাতেও ফোনে বাবার বাড়ির সকলের স্বাভাবিকভাবে কথা বলে তোহরা। পর দিন সকালে তোহরার মৃত্যূর খবর আসে। শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে হত্যা করে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্নহত্যার প্রচার করেছে বলেও অভিযোগ করেন ইউসুফ। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করার কথাও বলেন তিনি।
আল-আমিনের বাবা আনোয়ার শেখ জানান, সকালে গোসল করে এসে তোহরা নিজ ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে আত্নহত্যা করে। ঘরে তার কোন সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে উথলীস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিবালয় থানার ওসি মো. শাহীন জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনা এখনও কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি।
অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই সাইটে প্রকাশিত তথ্য, সংবাদ, ছবি, অডিও-ভিডিও ও যেকোনো উপাদান গবেষণামূলক কাজে ব্যবহার ও প্রদর্শন করা যাবে। সেক্ষেত্রে ‘বাংলা বাহন’ রেফারেন্স উল্লেখ করতে হবে।