দুই দশকের মধ্যে এই প্রথম পিছিয়ে গেল ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলন। বিষয়টি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে ভারতের রাজনৈতিক শিবিরে।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, সম্প্রতি ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে নয়াদিল্লির কোয়াড (আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের চারদেশীয় অক্ষ) নির্ভরতা নিয়ে প্রকাশ্যেই বিরোধিতা জানিয়েছিল মস্কো।
এখন প্রশ্ন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ভারতের কৌশলগত নির্ভরতার জবাব হিসেবে মস্কো বার্ষিক সম্মেলন পিছিয়ে দিল কি-না।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই সংক্রান্ত একটি সংবাদপত্রের রিপোর্ট উল্লেখ করে বুধবার বলেন, “রাশিয়া ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। আমাদের ঐতিহ্যগত সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করা হলে তা অদূরদর্শিতার কাজ হবে, যা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক।”
অবশ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, কভিড মহামারির কারণে ২০২০ সালের ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা গেল না। দুই সরকার মিলিতভাবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যাপারে যে সব কথা বলা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়ানো দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচায়ক।
এ দিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে না আসার অনুরোধ করেছে ভারতের আন্দোলনরত কৃষকেরা।
মোদি সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে নিত্যনতুন কৌশল নিচ্ছে দিল্লির সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকেরা। এবার আর দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন নয়, কৃষক নেতাদের আরজি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কাছে।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে নির্বাচিত শিখ সদস্যদের মাধ্যমে তারা জনসনকে অনুরোধ করেছেন, তিনি যেন আগামী ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে না আসেন। জনসন এবার প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি। মোদি সরকারের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে তিনি ওই দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দিল্লি আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কিন্তু তার এই আসা নিয়ে সামান্য হলেও সংশয় দেখা দিয়েছে। কৃষকেরা ব্রিটিশ পররাষ্ট্রসচিবের কাছে চিঠি দিয়ে এই অনুরোধ করেছেন। তার ওপর পার্লামেন্টের শিখ সদস্যদেরও অনুরোধ করা হয়েছে, বিষয়টি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলতে। গত সপ্তাহে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারতের কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ উঠেছিল। তুলেছিলেন পার্লামেন্টের শিখ সদস্য তনমনজিৎ সিং ধেসি। তিনি বরিস জনসনকে প্রশ্ন করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী কি আমাদের উদ্বেগের কথা এবং কৃষক সমস্যার দ্রুত সমাধানের অনুরোধ ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন?
জনসন অবশ্য উল্টো জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যা হচ্ছে, তা খুবই উদ্বেগের। কিন্তু এটা ওই দুই দেশের বিষয়। দুই দেশের সরকারের উচিত, সমস্যার সমাধান করা। কৃষকদের প্রসঙ্গে এভাবে পাকিস্তানকে টেনে আনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনসনকে নিয়ে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ কম হয়নি।
কভিড মহামারির কারণে ২০২০ সালের ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা গেল না। দুই সরকার মিলিতভাবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যাপারে যে সব কথা বলা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়ানো দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচায়ক।
এই সাইটে প্রকাশিত তথ্য, সংবাদ, ছবি, অডিও-ভিডিও ও যেকোনো উপাদান গবেষণামূলক কাজে ব্যবহার ও প্রদর্শন করা যাবে। সেক্ষেত্রে ‘বাংলা বাহন’ রেফারেন্স উল্লেখ করতে হবে।