দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আরো ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। একই সময়ে দেশের ৩ হাজার ৩১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১২ দিনে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। গত বছর মার্চে দেশে কভিড-১৯ রোগী শনাক্তের পর থেকে এই প্রথম এত কম সময়ের ব্যবধানে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হলো।
আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশের ৩৫৮টি পরীক্ষাগারে মোট ২৪ হাজার ২৩৭ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সর্বশেষ শনাক্তসহ দেশে করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭ লাখ ৫১ হাজার ৬৫৯। সর্বশেষ ৭৮ জনসহ বাংলাদেশে মোট মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ২২৮। হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নতুন ৫ হাজার ২৩৪ রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬৬ হাজার ৯২৭। আজ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৭৮ জনের মধ্যে ৪৫ জন পুরুষ ও ৩৩ জন নারী।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানা যায়। এর ১০ দিন পরই ভাইরাসটিতে প্রথম মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শুরুতে সংক্রমণের হার ছিল কম। এরপর মে মাসের মাঝামাঝি সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। পরে সংক্রমণ নিম্নমুখী হলেও নভেম্বর-ডিসেম্বরে কিছুটা বাড়ে। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চে সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়। তবে প্রথমবারের চেয়ে দ্বিতীয়বারের সংক্রমণের তীব্রতা অনেক বেশি। বিশ্বজুড়েই করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আগের চেয়ে বেশি প্রাণঘাতী রূপে ধরা দিয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও জানান, পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রোধে ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। এরপর এক দফা বাড়ানো হয় এর মেয়াদ।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে শতাধিক দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। গত বছরের ১১ মার্চ বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় কভিড-১৯ প্রতিরোধী গণটিকাদান কর্মসূচি। দেশের চল্লিশোর্ধ্ব ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নাগরিকদের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’ টিকা দেয়া হচ্ছে। গতকাল থেকে প্রথম ডোজের টিকাদান বন্ধ থাকলেও চলছে দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা পাওয়া নিয়ে কিছু অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বাধীন কোভ্যাক্স জোট থেকে ফাইজারের এক লাখ ডোজ টিকা পাবে বাংলাদেশ।