1. admin@banglabahon.com : Md Sohel Reza :
সব সংস্কারে প্রস্তুত আছি, সবার পরামর্শ চাই: ড. ইউনূস
বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন

সব সংস্কারে প্রস্তুত আছি, সবার পরামর্শ চাই: ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৪
ছবি: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবের ফসল। তাই বিশ্ব-বিজ্ঞানে অবদান রাখতে প্রয়োজনীয় সব সংস্কার এবং উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির সকল প্রয়াস নিতে প্রস্তুত আছে। এ কাজে নিবেদিত সবার কাছ থেকে চাহিদা ও পরামর্শ আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ‘বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যানের শতবর্ষ উদ্যাপন: ঢাকার উত্তরাধিকার’ শীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগ এবং সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি অ্যান্ড রিসার্চ ইন ন্যাচারাল সায়েন্সেস, ঢাবি যৌথভাবে দুই দিনব্যাপী এ উত্সবের আয়োজন করেছে।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র-শিক্ষক সমাজ আবার তাদের চিন্তার স্বাধীনতা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চা ফিরে পেয়েছেন। এর সঙ্গে এখন যোগ করতে হবে। বিশ্ব-বিজ্ঞানে অবদান রাখার সক্ষমতা। আকাক্সক্ষাকে উচ্চে রেখে দৈনন্দিন পঠন-পাঠন গবেষণার মাধ্যমেই সেটি অর্জিত হবে। ১৯২৪ সালে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর আবিষ্কারের পরিবেশ যেভাবে গড়ে ওঠেছিল, আজও সেভাবেই গড়ে উঠবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আমাদের তরুণদের মনে বিশ্বাস সৃষ্টি করতে হবে যে আমরাই বিশ্ব। আজ আমরা সেই আকাঙ্ক্ষারই শতবার্ষিকী পালন করছি ।’

বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে বাংলাদেশের ইতিহাসের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ আমরা আমাদের দেশের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের একজন উজ্জ্বলতম তারকার মহত্তম অবদানের শতবার্ষিকী উদ্যাপন করতে এসেছি। যিনি ১৯২৪ সালের এমন একটি সময়ে তার আবিষ্কার বোস-আইনস্টাইন কোয়ান্টাম স্ট্যাটিসটিক্সের জন্য বিজ্ঞান ইতিহাসের অংশ হয়ে গিয়েছিলেন। আর তিনি এটি করেছিলেন আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নবীন অধ্যাপক হিসেবে কার্জন হলের একটি কামরায় বসে, আজও যেটি পদার্থবিদ্যার ছাত্র-শিক্ষকদের প্রাণচাঞ্চল্যে মুখরিত।

ড. ইউনূস বলেন, তার আবিষ্কারের গুরুত্বের কারণে পৃথিবীর নানা দেশের পদার্থবিদগণ এই শতবার্ষিকী উদ্যাপন করছেন। কিন্তু আমাদের জন্য এই আবিষ্কারের মর্মটাই আলাদা। পদার্থবিদরা বলেন—বিংশ শতাব্দীর ঐ পর্যায়ে পদার্থবিদ্যায় যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছিল কোয়ান্টাম থিওরির মাধ্যমে। এটি ছিল তার মধ্যে একটি বড় সংযোজন। এর মাধ্যমে বসু বিশ্ব-বিজ্ঞানের মানচিত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের ঢাকা নগরীকে উজ্জ্বলভাবে চিহ্নিত করে দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, আজ আমরা যখন ছাত্র-জনতার একটি সর্বাত্মক বিপ্লবের মাধ্যমে দেশকে নতুনভাবে গড়ার প্রয়াস নিয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয়কে তার যথাযথ চর্চার জায়গায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছি, তখন পরিবর্তনের দিগদর্শিকা হিসেবে উদ্যাপনের জন্য বসুর আবিষ্কারের এই শতবার্ষিকীর থেকে যথাযথ বিষয় আর কী হতে পারে? আমাদের বিপ্লবের নায়ক ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রেরণা হিসেবেও বা এর থেকে বড় গৌরবের স্মরণও আর কী হতে পারে?

তিনি বলেন, ১৯২৪ সাল অনেক পেছনে রেখে এসেছি। কালের পরিক্রমায় বসুর আবিষ্কারটি কী এতটুকু ম্লান হয়েছে? পদার্থবিদরা বলছেন মোটেই না। যার প্রমাণ এই আবিষ্কারের ভবিষ্যদ্বাণীকে সত্য প্রমাণ করে সৃষ্ট বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেট পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন ২০০১ সালে। এ নিয়ে গবেষণা চলছেই।

তিনি উল্লেখ করেন, সারা দুনিয়ার পদার্থবিদ্যার ছাত্ররা জানে যাবতীয় পদার্থ-শক্তি সবকিছুর একেবারে মূলে যে মৌলিক কণিকাগুলো এদের শ্রেণি বিভাজনে একটি বড় ভূমিকা রেখেছে বসুর থিওরির দ্বারা ঠিক করে দেওয়া নির্দেশিকা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সত্যেন্দ্রনাথ বসু শিক্ষার সর্বস্তরে, বিশেষ করে উচ্চতর বিজ্ঞান শিক্ষায় বাংলা ভাষা প্রচলনের জন্য তর্কবিতর্ক করছেন, বাংলায় বই লিখছেন, পত্রিকা বের করছেন, নিজের পাঠদানে বাংলা ব্যবহার করছেন। শহরের সাহিত্যানুরাগী সংস্কৃতিসেবীদের কয়েক জনকে নিয়ে নিয়মিত বৈঠকি, আড্ডা গড়ে তুলেছেন।

পঞ্চাশের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকার সময়ের স্মৃতিচারণ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস বলেন, পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখনকার ঢাকার সঙ্গে বসুর ঢাকারই মিল বেশি ছিল। কাজেই পরিবেশটি বেশ কল্পনা করতে পারি, ঢাকার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। সেই শান্ত ছোট শহরকে, সেই সবুজ রমনাকে আর ফেরত আনা যাবে না, কিন্তু সেই গৌরবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা অবশ্যই ফেরত আনতে পারি, আজকের স্বাধীন বাংলাদেশে। বোস-আইনস্টাইন তত্ত্বের শতবার্ষিকীতে এ কথা আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগ এবং সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি অ্যান্ড রিসার্চ ইন ন্যাচারাল সায়েন্সেস, ঢাবি যৌথভাবে দুই দিনব্যাপী এ উত্সবের আয়োজন করেছে।

শেয়ার করতে চাইলে...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ...
© বাংলা বাহন সকল অধিকার সংরক্ষিত ২০১৯-২০২৪।
ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট ও কাস্টমাইজেশন: বাংলা বাহন আইটি টিম
error: Content is protected !!