মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথলি ইউনিয়নে টিসিবি’র ডিলার উৎপল দাস পণ্য কালো বাজারে বিক্রি করে জনতার কাছে ধরা পড়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিয়েছেন উথলি ইউনিয়ন পরিষদ সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মনোয়ারা বেগম। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে মহিলা মেম্বার ও ডিলারকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে, এ বিষয়ে ডিলার ও মহিলা মেম্বারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্টরা ও স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ২ বছর আগে উৎপল দাস আওয়ামী লীগের প্রভাব বিস্তার ও তদবিরে ‘দাস রাইস মিল ও মেসার্স রেণু ট্রেডার্সের নামে উথলি ইউনিয়নের ৪,৫,৬,৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে টিসিবি’র ডিলার হন। আলাদা নামের প্রতিষ্ঠানে তিনি প্রায় ১১ শতাধিক কার্ডধারীদের কাছে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি করে আসছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, নিয়ম বর্হিভূতভাবে উৎপল দাস গত শনিবার উথলি বাজারের নাজিম স্টোরের মালিক নাজিমুদ্দিনের কাছে টিসিবি’র ২ লিটার সয়াবিন তেলের ১৭টি বোতল ও ১৭ কেজি চিনি বিক্রি করেন। এসব পণ্য কম মূল্যে কিনে নিজ বাড়িতে নিয়ে রাখেন নাজিমুদ্দিন। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে টিসিবি’র পণ্য হাতেনাতে ধরে। নাজিমুদ্দিন স্থানীয় জনতার কাছে ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করেন। এ ঘটনার পর থেকেই স্থানীয় উথলি ইউনিয়ন পরিষদ সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মনোয়ারা বেগম কতিপয় লোকজন নিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে ধামাচাপা দেন। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়েও তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)কেও জানাননি। কালোবাজারি ওই ডিলারকে তিনি বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
নাজিম স্টোরের মালিক নাজিমুদ্দিন টিসিবি’র পণ্য কেনার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, উৎপল দাসের কর্মচারি পবন দাসে টিসিবি’র পণ্য তার দোকানে দিয়ে গেছেন। সরকারি পণ্য তাই দোকানে না রেখে বাড়ি নিয়ে রেখেছিলেন। পণ্যগুলো মহিলা মেম্বার নিয়ে গেছেন। কিন্তু, টাকা ফেরত দেননি। সরকারি পণ্য কেন কিনেছেন? এমন প্রশ্লের উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন টিসিবি’র কার্ডধারী অভিযোগ করে বলেন,‘মাঝে মধ্যে ডিলারের কাছে পণ্য পাওয়া যায় না। আজ ধরা পড়েছে। তাতে বুঝা যাচ্ছে এই ডিলার আমাদের পণ্য কালো বাজারে বিক্রি করে দিয়েছে। আমরা ডিলারের লাইন্সেস বাতিলসহ শাস্তি দাবি করছি।’
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উথলি ইউনিয়ন পরিষদ সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মনোয়ারা বেগম ও ডিলার উৎপল দাসের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
তবে, উথলি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম ফয়েজ উদ্দিন বলেন, ‘টিসিবি ডিলারদের বিষয়টি ইউএনও স্যার দেখেন। ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তাঁকে জানাবো।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন,‘বিষয়টি আমি ইতিমধ্যে জেনেছি। ট্যাগ অফিসারের দায়িত্বে আছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা। তাকে বিষয়টি খোজ নিতে নির্দেশ দিয়েছি।’