1. admin@banglabahon.com : Md Sohel Reza :
‘লাভ’-এর মধ্যে ‘জিহাদ’ থাকতে পারে না: অমর্ত্য সেন
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম

‘লাভ’-এর মধ্যে ‘জিহাদ’ থাকতে পারে না: অমর্ত্য সেন

বিদেশ ডেস্ক
  • প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০
ফাইল ছবি: নোবেল-জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

ভিন ধর্মে বিয়ে রুখতে ধর্মান্তরকরণ প্রতিরোধী আইন নিয়ে ভারতে যা হচ্ছে, তাকে এক হাত নিলেন নোবেল-জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন থেকে সোমবার টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারকে উদ্ধৃত করে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা।

সেখানে অমর্ত্য বলেন, ‘‘এটা খুবই চিন্তার বিষয়। একে মানুষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে মনে হচ্ছে। জীবন যাপনের অধিকার তো মৌলিক অধিকার হিসেব স্বীকৃত। কিন্তু এই আইনের ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। কারণ যে কোনো মানুষই নিজের ধর্ম বদলে অন্য ধর্মগ্রহণ করতে পারেন। সেটা সংবিধান স্বীকৃত। তাই এই আইন অসাংবিধানিক।’’

‘লাভ জিহাদ’-এর অজুহাতে একের পর এক বিজেপিশাসিত রাজ্য যখন বিয়ের নামে ধর্মান্তরকরণ প্রতিরোধী আইন কার্যকর করতে উঠেপড়ে লেগেছে, সেই সময় অমর্ত্য সেনের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।

ঘটনাচক্রে সোমবারই ভিনধর্মী এক দম্পতিকে নিয়ে মামলার শুনানিতে রায় দিতে গিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্ট বলেছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক তরুণী যদি স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান, নিজের ইচ্ছায় জীবন কাটাতে চান, সেই স্বাধীনতা রয়েছে তার।

‘‘অবিলম্বে এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চাওয়া উচিত। এই আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা উচিত। এটা খুবই বড় বিষয়। ভারতের ইতিহাসে এমন দৃষ্টান্ত নেই। আকবরের সময় নিয়ম হয়েছিল, যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো ধর্ম গ্রহণ করতে পারেন। এবং যে কোনো ধর্মে বিয়ে করতে পারেন। ফলে আমাদের দেশে সেই সংস্কৃতি রয়েছে। আমাদের সংবিধানে ব্যক্তি স্বাধীনতা রক্ষার কথা খুব স্পষ্টভাবে বলা আছে। ফলে এমন আইন সংবিধানকেই অপমান করে’’, এ মন্তব্য করেন নোবেল পুরস্কার-জয়ী অমর্ত্য সেন।

এর পর তার সরস মন্তব্য, ‘‘এখন ‘ক্রিমিনাল অ্যাক্ট অব লাভ জিহাদ’ বলা হচ্ছে। তলিয়ে দেখলে বোঝা যায় ‘লাভ’ বা প্রেমের মধ্যে কোনো ‘জিহাদ’ নেই। ভিন ধর্মের কাউকে ভালোবেসে বিয়ে করলে, তার মধ্যে কোনো ‘জিহাদ’ থাকতে পারে না। তেমনই একটি ধর্ম ছেড়ে অন্য কোনো ধর্ম গ্রহণ করলেও সমস্যা নেই। এটা একটা রাজনৈতিক দল করছে। এর ফলে ভারতকে অপমান করা হচ্ছে। এটা ভারতের সংস্কৃতি নয়। আমার বিশ্বাস, আদালত এর জবাব দেবে।’’

এ দিকে অমর্ত্য সেনের বাড়ি নিয়ে বিশ্ব ভারতীর এক মন্তব্যে সম্প্রতি বিতর্ক উঠেছে। তার শান্তিনিকেতনের বাড়ি প্রতীচীর সীমানায় বিশ্বভারতীর জমিও ঢুকে গেছে বলে অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই নোবেলজয়ী পক্ষে দাঁড়িয়ে বিশ্বভারতী তথা কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়ে ইতিমধ্যেই অর্থনীতিবিদকে চিঠি লিখেছেন তিনি। বাংলার পক্ষ থেকে মমতা ক্ষমাও চেয়েছেন। তা নিয়েই সরব হয়েছেন বুদ্ধিজীবীরাও।

এটা খুবই চিন্তার বিষয়। একে মানুষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে মনে হচ্ছে। জীবন যাপনের অধিকার তো মৌলিক অধিকার হিসেব স্বীকৃত। কিন্তু এই আইনের ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। কারণ যে কোনো মানুষই নিজের ধর্ম বদলে অন্য ধর্মগ্রহণ করতে পারেন। সেটা সংবিধান স্বীকৃত। তাই এই আইন অসাংবিধানিক।

শেয়ার করতে চাইলে...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ...
© বাংলা বাহন সকল অধিকার সংরক্ষিত ২০১৯-২০২৪।
ডিজাইন ও আইটি সাপোর্ট: বাংলা বাহন
error: Content is protected !!