ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে বিএনপি’র নামে বিজিবি কার্ড ছাপিয়ে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে সহায় ও দুস্থ্যদের কাছে বিক্রিকালে প্রতারক চক্রের সদস্য ইয়াকুব মুন্সিকে আটকে করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে স্থানীয় জনতা, সাংবাদিক ও বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা তাকে হাতেনাতে ধরেন।
তার কাছ নগদ অর্থসহ থেকে ৯৮টি ভূয়া বিজিবি কার্ড জব্দ করা হয়েছে। এ সময় প্রতারক চক্রের আরেক সদস্য লেবু পল্টন পালিয়ে যায়।
তাদের সম্পর্কে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করায় ‘বাংলা বাহন’ নিউজপোর্টালের নির্বাহী সম্পাদক মো. সোহেল রেজাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে লেবুর স্বজনেরা। এ ঘটনায় ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর।
ছবি: প্রতারণাকালে ইয়াকুব মুন্সী ও লেবু পল্টন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, দুপুরে ওই উপজেলার সাতুরিয়া (পশ্চিম পয়লা) গ্রামের মৃত কামাল মুন্সির ছেলে ইয়াকুব ও রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত সাদেক পল্টনের ছেলে লেবু বিজিবি কার্ড স্থানীয় অসহায় ও দুস্থ্যদের কাছে কার্ড প্রতি একশ টাকা করে বিক্রি করছিলেন। কার্ডে লেখা রয়েছে,‘সাধারণ জনগণের জন্য সহযোহিতা, বিএনপি’র পক্ষ থেকে এই কার্ড প্রদান করা হলো। এর মধ্যে পাবেন, ২৫ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি তেল ও ২ কেজি চিনি।’ আর এই পণ্য গ্রহণকালে আরও দিতে হবে ৫ শ’ টাকা করে। এই এলাকার ১৩ জন এই কার্ড কেনন।
এরপর বিষয়টি সন্দেহ হলে স্থানীয় জনতা প্রথমে সাংবাদিক মো. সোহেল রেজাকে ও বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের জানায়। তার ঘটনাস্থলে এসে ইয়াকুবকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে খবর দেন। অন্যজন পালিয়ে যায়। পুলিশ এসে ইয়াকুবকে আটক করে তার কাছ থেকে ১৩ জন অসহায় ও দুস্থ্যের এনআইডি কার্ড, পাসপোর্ট ছবি লাগানোসহ ৯৮টি বিজিবি কার্ড উদ্ধার করে।
দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যের নামে শিবালয় থানায় মামলা করেন স্থানীয় তেওতা ইউনিয়ন বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাজেদ মিয়া।
সাংবাদিক মো. সোহেল রেজা অভিযোগ করেন, ‘ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে বিএনপি’র নামে বিজিবি কার্ড ছাপিয়ে প্রতারণার বিষয়টি পেশাগত দায়িত্ববোধ থেকে পুলিশকে জানালে ক্ষিপ্ত হন মামলার পলাতক ২ নম্বর আসামি লেবুর স্বজনেরা। ওসিকে বলে লেবুকে মামলা থেকে নাম কেটে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন তারই ভাই আক্কাস পল্টন। রাজি না হওয়ায় আরেক ভাই রাজ্জাক পল্টন ও ভাগিনা আমিনুর রহমান অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে তাকে ও পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় থানায় জিডি করেছেন তিনি।’
শিবালয় থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন,‘এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইয়াকুবকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। সাংবাদিক ও পরিবারের সদস্যের নিরাপত্তায় আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। তাকে আইগতভাবে শাস্তি ভোগ করতেই হবে।’
এ ঘটনার ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দা জানিয়ে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্ববায়ক কমিটির ১ নম্বর সদস্য সচিব এস এ জিন্নাহ কবীর কবির বলেন, ‘একটি চক্র গরিব-অসহায় মানুষের দুর্বলতাকে পুঁজি করে রাজনৈতিক দলকে বিতর্কিত করতে চেয়েছে। এর সঙ্গে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আমাদের নেতা-কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা পুলিশি নিয়েছেন। দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতে যারাই অপচেষ্টা করছে, তারাই স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর। আমরা নেতা-কর্মীদের নিয়ে তাদের সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত প্রতিহত করে দেবো। ’