ইজারার চুক্তিনামার শর্ত ভঙ্গ করে অবৈধভাবে পদ্মা নদীতে রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ-পাকশি নৌ-চ্যানেলের বাইরে থেকে ইজারাদারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা চার্জ আদায়ের অভিযোগ করছেন নৌযান মালিক-শ্রমিকরা। এতে পণ্য পরিবহনে অন্য নৌরুটের নৌযান মালিক-শ্রমিকরা বাড়তি টাকার ব্যয় গুণতে হচ্ছে। পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে পণ্যের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণে। বাড়তি টাকার বোঝা বইতে হচ্ছে ভোক্তাদের। বিষয়টি নিয়ে ইজারাদারকে সতর্ক করা হয়েছে, তাতেও বন্ধ না হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচা কার্যালয় থেকে জানা যায়, বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচা নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন রুপপুর নদী বন্দরের আওতাধীন পদ্মা নদীর রাজবাড়ি জেলার ‘গোয়ালন্দ-পাকশি নৌ-চ্যানেল’ এ চলাচলকারী নৌযান থেকে চার্জ আদায়ের জন্য ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ইজারা দেয়া হয়। ৩৬৫ দিন নৌযান থেকে চার্জ আদায়ের জন্য মেসার্স শাওন এন্টারপ্রাইজ প্রায় ৩ কোটি টাকায় ইজারা নেন। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইজারাদারের চুক্তিনামা করা হয়। এতে শর্ত উল্লেখযোগ্য শর্তের মধ্যে সীমানা ধরা হয়েছে ‘গোয়ালন্দ-পাকশি নৌ-চ্যানেলটি হয়ে চলাচলকারী নৌ-যান হতে চ্যানেল চার্জ আদায় কেন্দ্র’। এই নৌরুট সীমানার বাইরে কোন চার্জ আদায় করা যাবে না। যা সম্পুর্ণ অবৈধ। প্রথম শ্রেণির এই নৌরুটে রেজিষ্ট্যার্ড নৌযানের প্রতি গ্রস টন ধারণ ক্ষমতার শুল্ক ও ভ্যাটসহ নির্ধারণ করা হয় ৮ টাকা।
ভূক্তভোগি নৌযানের মালিক-শ্রমিকরা অভিযোগ করে জানান, গোয়ালন্দ-পাকশি নৌ-চ্যানেলে চলাচলকারী বাল্কহেড ও কার্গো জাহাজসহ ছোট-বড় নৌযান থেকে ইজারা আদায় করা হচ্ছে। এটি নৌযান মালিক-শ্রমিকরা বৈধ জেনেই চার্জ পরিশোধ করছে। কিন্তু, ওই চ্যানেলের বাইরে চলাচলকারী নৌযান থেকেও একইভাবে চার্জ আদায় করছে ইজারাদারের লোকজন। কেউ বৈধতা জানলে চাইলে বা প্রতিবাদ করলে নাজেহাল হতে হয়। জোর-জবরদস্তি করে আদায় করা হচ্ছে চার্জ। যেহেতু এসব নৌযান নিয়মিত নদীতে চলাচল করে তাই নিরাপত্তার কথা ভেবে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা চার্জ পরিশোধ করছে শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ইজারা প্রতিষ্ঠান মের্সাস শাওন এন্টারপ্রাইজের মালিক আবু সাঈদ জানান, চার্জ আদায়ের সীমানা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছেন। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ সীমানা বুঝিয়ে না দেয়ায় সীমানার বাইরে চ্যানেল চার্জ আদায়ে কিছু হেরফের হতে পারে।
বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচা নদী ও বন্দর কর্মকর্তা মো. শেখ সেলিম জানান, যারা ইজারা নেন, তারা সীমানা জেনেই ইজারায় অংশগ্রহণ করেন। তারপরও যদি তারা বলে সীমানা নির্ধারণের কথা, তা অগ্রহণযোগ্য ছাড়া কিছু হতে পারে না। নৌ চ্যানেলের সীমানার বাইরে চার্জ আদায় করে থাকলে ইজারাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাটুরিয়া নৌ পুলিশ থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জেনে ইজাদারকে সতর্ক করা হয়েছে। তারপরও যদি সীমানার বাইরে এসে নৌযান থেকে চার্জ আদায় করে। তাহলে ইজারাদারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।