মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ্মাবতী সাহার বিরুদ্ধে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ করা হয়েছে। শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিতভাবে এই অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীর মাতা।
প্রধান শিক্ষক কোমলমতি ওই শিক্ষার্থীকে ক্ষতি করা হবে বলে হুমকি দেয়ায় ভয়ে ও নিরাপত্তাহীনতায় বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের করার হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তবে, ঘটনাটি ম্যানেজ করে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ভূক্তভোগি শিক্ষার্থীর মাতা মিতু খাতুন জানান, তার মেয়ে হালিমা আক্তার চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ক্লাস রোল নম্বর ৫। প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় গণিত বিষয়ে নম্বর পেরেছে ৮৭। তারপরও ওই প্রধান শিক্ষক ক্লাসে গিয়ে তার মেয়েকে বলেছে,‘ তুমি বিদ্যালয়ে এসেছো কেন? তুমি পড়াশোনা করতে পার না, রিডিং পড়তে পার না। যোগ-বিয়োগ করতে পার না গণিতে এতো নম্বর কিভাবে পেলে? আমার বাসার পাশে দিয়ে তুমি আসা-যাওয়া করবে না।’ মেয়ের কাছ থেকে এসব কথা শুনে তিনি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে বলেন,‘এ বিষয়ে কিছু বলবো না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে আপনার মেয়ের ক্ষতি হবে।’ এই বলে হুমকি দিয়ে অসদাচরণ করেন।
এরপর তিনি এ বিষয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিতভাবে এই অভিযোগ করেছেন। প্রধান শিক্ষক ক্ষতি করার হুমকি দেয়ায় ভয়ে ও নিরাপত্তাহীনতায় বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে ওই শিক্ষার্থী।
আরও কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে জানান, প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সঙ্গে প্রায় দুর্ব্যবহার করেন। নিয়ম বহির্ভুত ভর্তি ফি আদায়, খেলাধূলার চাঁদা আদায় করেন। কেউ অপারগতা হলে তার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন। অনেক সময় অভিভাবকেরা হেনস্থার শিকার হয়েছেন।
বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী লোকজন জানান, ওই প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ করে থাকেন। পরীক্ষায় নম্বর কম দেয়া হবে কিংবা ফেল করিয়ে দেবে আশঙ্কায় কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। অসদাচরণের অভিযোগ করায় বিষয়টি বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ওই প্রধান শিক্ষক।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উথলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ্মাবতী সাহা জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তাকে কেউ নোটিসও করেনি। অভিযোগের লিখিত কাগজ না দেখে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন,‘শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
শিবালয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. সায়েদুর রহমান বলেন,‘ইউএনও মহোদয় ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। দ্রুতই বিদ্যালয় পরিদর্শন ও তদন্ত করা হবে।