1. admin@banglabahon.com : Md Sohel Reza :
শিবালয়ে কলেজ অধ্যক্ষের দুর্নীতিতে বেতন বকেয়া, তদন্তের নির্দেশ
শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:১২ অপরাহ্ন

শিবালয়ে কলেজ অধ্যক্ষের দুর্নীতিতে বেতন বকেয়া, তদন্তের নির্দেশ

মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা
  • প্রকাশিত : সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২৫

মানিকগঞ্জের শিবালয় সদর উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ড. বাসুদেব দে শিকদার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মাসাত করায় শিক্ষক-কর্মচারিদের প্রায় ১৯ মাসের বেতন বকেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বকেয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগিরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

অধ্যক্ষ তদন্ত বন্ধ ও বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নানা অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক-কর্মচারিরা। এ ঘটনায় তথ্য সংগ্রহকালে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের তদবির করেছেন এই অধ্যক্ষ ও তাঁর লোকজন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৯২ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর এমপিওভূক্ত করা হয় ১৯৯৮ সালে। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার অবসরে যান। আওয়ামী লীগ সরকারের আস্থাভাজন ও তদবিরে ওই পদে নিয়োগ পান ড. বাসুদেব দে শিকদার। তাঁর নিয়োগেও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত ও মামলা হলেও দলীয় প্রভাবে স্বপদে বহাল রয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ করে একেক সময় একেকজনকে গভর্নিং বডির সভাপতি ও সদস্যসহ উল্লেখযোগ্য পদে বিনাভোটে বসিয়েছেন এই অধ্যক্ষ।

অভিযোগ রয়েছে, তাঁর সময়ে প্রত্যেক শিক্ষক-কর্মচারি নিয়োগে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য করা হয়েছে। কলেজে ভাউচারে অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কাঁচা ভাউচারে উন্নয়ন প্রকল্পে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়টিও নিরিক্ষা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। মৌখিকভাবে খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে বাড়িতে নিজের ছেলেকে প্রাইভেট পড়িয়েছেন। কলেজের ফান্ড থেকে শিক্ষকের বেতন দিয়েছেন। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে গভর্নিং বড়ি সভাপতি ও সদস্যদের সঙ্গে দ্বন্ধে জড়িয়েছেনও তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিকবার তদন্ত হয়েছে। কলেজের আভ্যন্তরীণ নিরিক্ষা, অধিদপ্তরের নিরিক্ষা ও তদন্তে প্রতিবেদনে এই অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু, প্রতিবারেই আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব বিস্তার, ম্যানেজ ও নিয়ম বর্হিভূত গভর্নিং বডির রেজুলেশনের মাধ্যমে বিষয়গুলো ধামাচাপা দেয়া হয়েছে।

তিনি সব সময়ই কলেজের আয়-ব্যয়ের ভাউচার ও উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ ও নিরিক্ষা প্রতিবেদন গোপন রাখেন। কোনভাবেই প্রকাশ করেন না। এগুলো প্রকাশ্যে এলেই তাঁর নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয় বেরিয়ে আসবে। যে কারণে কলেজের বাৎসরিক আয় ও ব্যয়ের ভাউচারসহ অন্যান্য নথিপত্র বাস্তবিক যাচাইয়ের দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই।

শিক্ষক-কর্মচারিরা অভিযোগ করে জানান, কলেজে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। কলেজের পর্যাপ্ত আয়ও রয়েছে। কিন্তু, ৫ বছর ধরে পর্যায়ক্রমে তাদের এ পর্যন্ত ১৯ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। তাদের মধ্যে এমপিওভূক্ত শিক্ষক-কর্মচারি ছাড়াও অন্তত ১৬ শিক্ষক-কর্মচারি রয়েছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতন জীবন কাটাচ্ছেন তারা। শিক্ষার পরিবেশ নষ্টের আশঙ্কা করছেন তারা। তাই বাধ্য হয়েই এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছ লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে শিবালয় সদর উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ড. বাসুদেব দে শিকদার জানান, কলেজে অতিরিক্ত কোন ভাউচারে ব্যয় করা হয় না। কলেজে শিক্ষক ও কর্মচারির মাসিক বেতন প্রয়োজন ৫ লাখ টাকা, বছরে ৬০ লাখ। সেখানে শিক্ষার্থীদের বেতন থেকে আয় হয় প্রায় ৩০ লাখ টাকা। তাই গত ৫ বছরের এ পর্যন্ত ১৯ মাস  শিক্ষক ও কর্মচারিদের বেতন বকেয়া থাকছে। তবে, আয়, ব্যয়ের ভাউচার ও বেতন শীটসহ অন্যান্য নথিপত্র দেখাতে রাজি হননি তিনি।

এ ব্যাপারে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মো. বেলাল হোসেন বলেন,‘চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। তারা গত দু’বছরের আয়-ব্যয়সহ অন্যান্য বিষয় তদন্ত করবে। কোন অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অন্য কোন বিষয়েও অভিযোগ এলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করতে চাইলে...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ...
© বাংলা বাহন সকল অধিকার সংরক্ষিত ২০১৯-২০২৫।
ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট ও কাস্টমাইজেশন: বাংলা বাহন আইটি টিম
error: Content is protected !!