1. admin@banglabahon.com : Md Sohel Reza :
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুনে শিশুসহ নিহত ৫
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৩ অপরাহ্ন

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুনে শিশুসহ নিহত ৫

কক্সবাজার সংবাদদাতা
  • প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৩ মার্চ, ২০২১

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় নয় হাজার রোহিঙ্গা বসতি ও শতাধিক স্থানীয় বসতি পুড়ে গেছে।


রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত ১৪ এপিবিএন’র অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মো. আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিন শিশুসহ পাঁচজন নিহতের খবর পেয়েছি। তবে আমি এখনও মৃতদেহগুলো দেখিনি’।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমদ নিজাম উদ্দিন জানান, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুনে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অন্তত নয় হাজার রোহিঙ্গা পরিবারের বসতি পুড়ে গেছে। একইভাবে শতাধিক বাংলাদেশি পরিবারের বসতবাড়ি পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবিও বিরামহীন কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে’।


জানা গেছে, সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উখিয়ার বালুখালী ৮ ও ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও পুড়ে যায় নয় হাজারেও বেশি রোহিঙ্গাদের ঘর। এ ছাড়া পুড়ে যায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এনজিও অফিস ও পুলিশ ব্যারাক।


স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন জানিয়েছেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনের ঘটনায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা বালুখালী কাসেম মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয় নেয়া এসব রোহিঙ্গাদের অনেকের স্বজন নিখোঁজ রয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় বাংলাদেশী অন্তত দেড় শতাধিক পরিবারের বসতি পুড়ে গেছে।’


উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক জানান, ‘দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা বলা মশকিল। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক। অন্তত দেড়/দুই কিলোমিটার এলাকা আগুনের লেলিহান শিখায় ধ্বংস হয়ে গেছে।’


কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম রাতে জানিয়েছেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনী ও সেনাবাহিনীসহ সাত ইউনিট কাজ করতে বেগ পেতে হয়েছে। তবে আগুনে কী পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তা এখনো নির্নয় করা কঠিন’।


উখিয়ার বালুখালী ৮ নম্বর এপিবিএন’র অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মো. শিহাব কায়ছার জানিয়েছেন, ‘আগুনে বালুখালীতে অবস্থানরত ৪ নম্বর এপিবিএনের ব্যারাক আংশিক পুড়ে গেছে। তবে অস্ত্র ও মুল্যবান আসবাবপত্র নিরাপদে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আগুনে রোহিঙ্গাদের ঝুপড়ি ঘর ছাড়াও বেশকিছু এনজিও অফিস, স্কুল-মাদ্রাসা পুড়ে গেছে।’


উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি আব্দুল হামিদ জানান, আগুনের তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রায় পাঁচ শতাধিক ঘরসহ অন্তত এক হাজারের বেশি ঘর পুড়ে গেছে। পুড়ে গেছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সবচেয়ে বড় মার্কেট বালুখালী বলিবাজার। এতে ৫০ কোটি টাকার মুল্যের মালামাল পুড়ে গেছে। এঘটনায় তিন শিশুসহ পাঁচজন মারা গেছে’।


মিন আরা বেগম নামের এক রোহিঙ্গা নারী জানিয়েছেন, ক্যাম্পটির ৮ নম্বর ব্লক থেকেই আগুনের সূত্রপাত ঘটে। একটি ছনের ছাউনির ঘর থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। আগুন দেখে আবদুস শুকুর তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের নিয়ে দৌড়ে আশ্রয় নেন কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে।

উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) গাজী সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, আগুনের সূত্রপাত নিয়ে এখনো তেমন বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে গিয়ে রোহিঙ্গাদের কাছে জানতে চাইলে তারাও নানা তথ্য দিয়ে আসছে। এমনকি রোহিঙ্গারাই একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারপ করে আসছে। তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসল ঘটনার তথ্য।


কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু-দ্দৌজা জানান, উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এখনো পর্যন্ত কি পরিমাণ রোহিঙ্গাদের বসতি ক্ষতি হয়েছে তা জানা যায়নি। ক্যাম্পে আগুন লাগার শুরু থেকে ফায়ার সার্ভিসের উখিয়া স্টেশনের দুটি ইউনিটের পাশাপাশি টেকনাফের ২টি, কক্সবাজারের ২টি এবং রামুর ১টি ইউনিট ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।


এদিকে, দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হাজার হাজার লোক আশ্রয়স্থল হারিয়ে এক কাপড়ে আশ্রয় নিয়েছে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে। আশ্রয়হারা লোকজন হারিয়েছে তাদের ক্যাম্পের ঝুপড়ি ঘরের সব মালামাল। আবার অনেকেই হারিয়েছে তাদের সন্তান-সন্ততিও।

উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এখনো পর্যন্ত কি পরিমাণ রোহিঙ্গাদের বসতি ক্ষতি হয়েছে তা জানা যায়নি। ক্যাম্পে আগুন লাগার শুরু থেকে ফায়ার সার্ভিসের উখিয়া স্টেশনের দুটি ইউনিটের পাশাপাশি টেকনাফের ২টি, কক্সবাজারের ২টি এবং রামুর ১টি ইউনিট ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

শেয়ার করতে চাইলে...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ...
© বাংলা বাহন সকল অধিকার সংরক্ষিত ২০১৯-২০২৪।
ডিজাইন ও আইটি সাপোর্ট: বাংলা বাহন
error: Content is protected !!